রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
ওই ক্রীড়াঙ্গণটি উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়িতে। সেখানে তা বিশ্ববাংলা ক্রীড়াঙ্গণ নামে বহুল পরিচিত। সাইয়ের হাতে বৃহৎ ওই ক্রীড়াঙ্গণ তুলে দেওয়ার পেছনে রাজ্যের একমাত্র লক্ষ্য ছিল উত্তরবঙ্গ থেকে নতুন নতুন প্রতিভা উঠে আসবে সাইয়ের ওই শিক্ষণ শিবির থেকে। কিন্তু, সেসব তো দূর অস্ত, ২০১৬ সালে রাজ্য সরকারের হাত থেকে পাওয়া সেই ক্রীড়াঙ্গণে এক ছটাকও কিছু করেনি সাই। বরং যে পরিকাঠামো গড়ে ওই ক্রীড়াক্ষেত্র কেন্দ্রের হাতে তুলে দিয়েছিল রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দপ্তর, বর্তমানে তা ক্রমশই বনবাদাড়ে ভরে গিয়েছে। স্থায়ী কাঠামোর ভেতরে, বাইরে গাছ-আগাছায় ভর্তি। মনে হয় যেন পোড়ো কোনও বাড়ি, ঘন জঙ্গলে ভরা। অথচ প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে তার পরিকাঠামো গড়ে তুলেছিল রাজ্য সরকার। আর জমির দাম প্রায় সাড়ে তিনশো কোটি টাকা।
বর্তমানে বিশ্ববাংলা ক্রীড়াঙ্গণের ওই হাল দেখে ‘হতাশ’ রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দপ্তর। সোমবার তা জানিয়ে সরাসরি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দপ্তরের বিভাগীয় মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। এমনকী বিষয়টি জানিয়ে তিনি কেন্দ্রীয় ক্রীড়া ও যুবকল্যাণমন্ত্রী অনুরাগ সিং ঠাকুরকে একটি চিঠিও দিয়েছেন। ওই চিঠিতে অরূপবাবু লিখেছেন, ২০১৮ সালে তদানীন্তন ক্রীড়ামন্ত্রী কর্নেল আর এস রাঠোর এবং ২০২০তে ওই দপ্তরের মন্ত্রী কিরন রিজিুজুকেও এই বিষয়টি জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু, তাঁদের কাছ থেকে কোনও সাড়া পাননি। আজও অনাদরে পড়ে রয়েছে ২৭ একরের সেই ক্রীড়াঙ্গণ। ভরে যাচ্ছে ঝোপ-ঝাড়ে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে লেখা ওই চিঠিতে বলা হয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একদিকে মেধা’র অণ্বেষণে দিনরাত কাজ করাচ্ছেন। বিশ্ব বাংলা ক্রীড়াঙ্গণ তাঁর স্বপ্নের প্রকল্প। সেখানে সাইয়ের মতো একটা সংস্থা এতবড় ক্রীড়াঙ্গণ হাতে পেয়েও গত পাঁচবছরেও তা কাজে লাগাতে পারল না। এটা সাইয়ের ব্যর্থতা বলেই মনে করছেন অরূপবাবু। চিঠিতে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন আগামী তিনমাস আরও দেখব। আশা করছি, সাই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করবেন। কিন্তু, তারপরেও কিছু না হলে চুক্তির (মউ) শর্ত থেকে বেরিয়ে আসবে সরকার। এদিকে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই উত্তরবঙ্গে জোর সমালোচনা শুরু হয়েছে। জলপাইগুড়ির ক্রীড়াপ্রেমীদের কথায়, গত লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে ব্যাপক সাফল্য পাওয়ার বিজেপি ঢালাও উন্নয়নের কথা শুনিয়েছিল। কেন্দ্রীয় সরকারে থেকেও বিজেপি আজ পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের উন্নয়নে কিছুই করেনি। উল্টো রাজ্য সরকার এতবড় একটা পরিকাঠামো হাতে তুলে দিলেও পাঁচবছরে তা কাজে লাগাতে পারল না কেন্দ্রীয় সরকার। স্বভাবতই, বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকারের উত্তরবঙ্গের প্রতি দরদ কতটা, তা এই ঘটনা থেকেই প্রমাণিত।