গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
পুজোর সময় লুচি, ভোগ রন্ধন, ফলমূল কাটা, পুজোর জোগাড়, মন্দিরে ধুপ-দীপ জ্বালানো সবই করে পুরুষেরাই। পরম্পরা মেনে। আর কংসবণিক সম্প্রদায়ের পরিবারের অর্থ দিয়েই মায়ের পুজো হয়। সঙ্গে থাকেন রাম, লক্ষ্মণ, জয়া, বিজয়া সহ ২২ দেবদেবী। বিগ বাজেটের পুজো নয়। তবুও এই পুজো শহরের মধ্যে অন্যতম আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। মহাষ্ঠমীতে মায়ের কাছে অঞ্জলি দেওয়ার জন্য ভক্তদের ঢল নামে। বিসর্জনের রীতিও শহরবাসীর কাছে নজরকাড়া এক অনুষ্ঠান।
মন্দির সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, মহাষষ্ঠীর দিন উন্মোচিত হয় মাতৃ প্রতিমা। বিশাল আকার এক চালা মায়ের মূর্তি। মহাসপ্তমীর সকালে নবপত্রিকার প্রবেশ থেকে দশমীর সকালে অপরাজিতা পূজা পর্যন্ত মহাসমারোহে চলতে থাকে আরাধনা। মহাষ্টমীর সন্ধি পুজোয় ভক্ত সমাগম বেড়ে যায়। বিসর্জন হয় দশমীর সন্ধ্যায়, ভক্তদের কাঁধে চড়ে মা যান মহানন্দার নিমতলী ঘাটে। সেখানে নৌকায় মাকে পুনরায় একই বেশে সাজানো হয়। তারপর নিমতলি ঘাট থেকে মা রওনা দেন মিশন ঘাটের উদ্দেশে। সেখানে দুর্গার অপেক্ষায় থাকেন সাহাপাড়ার মা দুর্গা। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে কুশল বিনিময় হয়,এই পরম্পরা অতীতের। মালদহের আদি কংস বণিক দুর্গাবাড়ি কমিটির সভাপতি নিমাই চন্দ্র দত্ত বলেন, জেলার মধ্য অন্যতম ঐতিহ্যবাহী পুজো। বাইরে থেকে কোনওদিন চাঁদা তোলা হয় না। ছেলেরা পুজোর আয়োজন করে। এবারও তাই হবে।
আদি কংসবণিক দুর্গাবাড়ির পুরোহিত অভিজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, এটি জেলার প্রতিষ্ঠিত মন্দির। সবাই প্রসাদ পাওয়ার জন্য আগ্রহী হয়ে থাকে। নিয়ম নিষ্ঠা মেনে পুজো হয়। অন্ন ভোগ হয় না। শুধু লুচির ভোগ হয়। মেয়েরা পুজোর জোগাড় করে না। জনশ্রুতি, আজ থেকে ৩৫০ বছর আগে মহানন্দা নদীর নিমতলি ঘাটে এক শিলা ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। পরবর্তীকালে তৎকালীন জমিদার গিরিজাকান্ত দাস সেই শিলা প্রতিষ্ঠিত করে পুজো শুরু করেন। জমিদার বয়স্ক অবস্থায় এই পুজোর ভার অর্পণ করেন আদি সম্প্রদায়ের হাতে। সেই থেকে আজকের দুর্গা বাড়ির পুজো। এরপর ১২৭৫সালে নির্মিত হয় দুর্গাবাড়ি মন্দিরটি। সেই থেকে আজও, একই পরম্পরা মেনে পুজো চলছে।