কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
করোনা আবহে বাড়ির সব শরিকরা উপস্থিত হতে না পারলেও রীতিনীতি মেনেই পুজো হবে। এখানে তান্ত্রিক মতে পুজো হয়। ঐতিহ্য মেনে প্রতিমা হয় সাবেকি। দশমীর পরের দিন হয় মনসা পুজো। তান্ত্রিক মতে পুজো করেন পরিবারের সদস্য গোবিন্দ মুখোপাধ্যায়। তান্ত্রিক মতে দেবীর পুজো হওয়ায় প্রতিদিন ছাগ বলির রীতি আছে। মাছ, মাংস দিয়ে দেবীর ভোগের ব্যবস্থা থাকে। গ্রামের বাসিন্দারাও পুজোয় অংশ নেন। বংশের পাঁচ শরিক পালা করে পুজোর দায়িত্ব ভাগ করে নেয়। গ্রামে মুখোপাধ্যায় পরিবারের তেমন কেউ থাকেন না। তবে পুজোয় সকলেই শামিল হন। কথিত আছে তৎকালীন যুগে অধুনা বাংলাদেশের তারাজু গ্রামের প্রভাবশালী জমিদার পূর্ণ চন্দ্র শর্মা রায়ের সময়ে ১৭৪২ সালে বর্গির হামলায় বর্ধমানের সিংহী গ্রাম থেকে তারাজু গ্রামে ঠাঁই নিয়েছিলেন পণ্ডিত রঘুনাথ মুখোপাধ্যায়। সেই সময় জমিদার পূর্ণ চন্দ্রের সভায় দেশ বিদেশের নাম করা তর্কনবিষরা শামিল হতেন। তর্কযুদ্ধে জয়ী হয়েছিলেন রঘুনাথ মুখোপাধ্যায়। সেই সময় তাঁকে তর্কালঙ্কার উপাধি দিয়ে জমিদার পূর্ণ চন্দ্র শর্মা রায় তারাজু গ্রামে থাকার জন্য স্থান দিয়েছিলেন। তারপর থেকে পণ্ডিত তারাজু গ্রামের নাম পরিবর্তন করে উদয়গ্রাম রাখেন এবং সেই সময় থেকে গ্রামে তাঁর নিজগৃহে দেবীদুর্গার আরাধনা শুরু করেন। ১৭৪৩ সাল থেকে দুর্গাপুজোর সূচনা করেন রঘুনাথবাবু। তারপর বংশানুক্রমে মুখোপাধ্যায় পরিবার দুর্গাপুজো করে আসছেন। দেশভাগের পর পশ্চিম দিনাজপুর পরে জেলা ভাগ হয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর হয়েছে। তবে সেই একই নিয়ম রীতি পালন করে পুজো করে আসছে পরিবারের বংশধররা। দশমীর দিন মেলা বসে। তবে এবার সামাজিক দূরত্ব মেনে প্রতিমা দর্শন ও পুজোর কাজ হবে।
পরিবারের সদস্য সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, এবারে আমাদের পুজো ২৭৯ বছরে পা রাখছে। করোনা পরিস্থিতি চলায় আমাদের পুজোর রীতিনীতির কোনও পরিবর্তন না হলেও যে আড়ম্বর হয়ে আসে তাতে কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। পুজোয় পাঁচটি পরিবার একত্রিত হতে পারি। পরিবারের বেশিরভাগ সদস্য কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। আমরা কয়েকটি পরিবার গ্রামে থাকি। দেবীকে আমরা তান্ত্রিক মতে আরাধনা করি। এক কাঠামোতে দেবী সাবেকি রূপে পূজিত হন। একাদশীতে মনসা পুজো করি। পুজো উপলক্ষে গ্রামবাসীদের জন্য এবারে ভোগের ব্যবস্থা থাকবে।