নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: স্ট্যাম্প ডিউটি আগের চেয়ে কমিয়েছে সরকার। তা সত্ত্বেও কোচবিহার জেলায় গত অর্থবর্ষের প্রথম পাঁচমাসের তুলনায় চলতি অর্থবর্ষে ওই সময়ে স্ট্যাম্প ডিউটি বাবদ রাজস্ব আয় বেড়েছে প্রায় ৭৯ শতাংশ। ওই সময়কালের মধ্যে গতবছর যে সংখ্যক মানুষ জমি, বাড়ি রেজিস্ট্রেশন করিয়েছিলেন, তার তুলনায় এ বছর সেই সংখ্যা দ্বিগুণ ছুঁয়েছে। সরকার গ্রামীণ ও শহর এলাকার স্ট্যাম্প ডিউটিতে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দুই শতাংশ করে ছাড় দিয়েছে। সেই সঙ্গে জমি, বাড়ি বিক্রির ক্ষেত্রেও সরকারি মূল্য স্থানীয় বাজার মূল্যের থেকে ১০ শতাংশ কম করা হয়েছে। সবমিলিয়ে গত বছরের আগস্ট মাস পর্যন্ত হিসেবের নিরিখে এ বছর এই খাতে সরকারের আয় বেড়েছে ১৪ কোটিরও বেশি। আর তাই চলতি অর্থবর্ষ শেষে জেলায় মোট রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ গত বছরের তুলনায় আরও বাড়বে বলে মনে করছে কোচবিহার জেলা প্রশাসন। কোচবিহারের ডিস্ট্রিক্ট রেজিস্টার পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী বলেন, গতবছরের তুলনায় এখনও পর্যন্ত জেলায় জমি ও বাড়ি কেনার ক্ষেত্রে রাজস্ব আদায় অনেকটাই বেড়েছে। মহামারী পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে যাঁরা জমি বাড়ি কিনেছেন, তাঁরা কিছু বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন। এই সুবিধা সব ধরনের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। বকেয়া থাকা রেজিস্ট্রেশন অনেকেই করে নিচ্ছেন। ফলে সরকারি কোষাগারে রাজস্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২০-’২১ অর্থবর্ষের আগস্ট মাস পর্যন্ত জেলায় যে আয় হয়েছিল, তার তুলনায় এই অর্থবর্ষের আগস্ট মাস পর্যন্ত প্রায় ৭৯ শতাংশ বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। আশা করছি, ২০২১-’২২ অর্থবর্ষে আয়ের পরিমাণ গতবছরের তুলনায় অনেকটাই বেশি হবে। ২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত কোচবিহার জেলায় স্ট্যাম্প ডিউটি খাতে মোট রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৮১ কোটি ৮৮ লক্ষ ৬৩ হাজার ৭১৯ টাকা। ওই অর্থবর্ষে অর্থাৎ ২০২০ সালের এপ্রিল মাস থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত আয়ের পরিমাণ ছিল ১৭ কোটি ৮৯ লক্ষ ১৫ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা। ওই সময়ের মধ্যে জেলায় মোট ৭৭৬৭টি জমি, বাড়ি রেজিস্ট্রেশন হয়েছিল। চলতি অর্থবর্ষে অর্থাৎ ২০২১ সালের ১ এপ্রিল থেকে আগস্ট মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত জেলায় রেজিস্ট্রেশন বাবদ আয় হয়েছে ৩১ কোটি ৯৯ লক্ষ ৭০ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা। এই সময়ের মধ্যে রেজিস্ট্রেশনের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে ১৫ হাজার ৬০৪টি। যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ।
গত বছরের ওই সময়ের থেকে এবার রেজিস্ট্রেশন বাবদ আয় বেড়েছে ১৪ কোটি ১০ লক্ষ ৫৫ হাজার ১৮৬ টাকা। অর্থাৎ গত অর্থবর্ষের এই সময়ের তুলনায় ৭৮.৮৪ শতাংশ বেশি। সরকারি ভ্যালুয়েশন অনুসারে গত বছরের থেকে জমির মূল্য তো বাড়েইনি, উল্টে আগের বছরের থেকে তা ১০ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ২০২১ সালের ৯ জুলাই থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত জমি, বাড়ি কেনার ক্ষেত্রে স্ট্যাম্প ডিউটির হার দুই শতাংশ কমানো হয়েছে। গ্রামীণ এলাকায় জমির রেজিস্ট্রেশনে স্ট্যাম্প ডিউটি দিতে হয় ৫ শতাংশ এবং শহরে এর পরিমাণ ৬ শতাংশ। এই দুই ক্ষেত্রেই দুই শতাংশ করে ছাড় মিলছে। এর ফলে মানুষ উৎসাহী হয়ে রেজিস্টেশন করতে এগিয়ে আসছেন।