কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
পুলিস জানিয়েছে, মৃত ছ’জনের মধ্যে এখনও পর্যন্ত তিনজনের নাম, ঠিকানা জানা গিয়েছে। তাঁরা হলেন ঝাড়খণ্ডের বারহাইটের টোডো মুর্মু (২১), ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জের লখিরাম কর্মকার (২৬) ও মনসা টুরি (২৩)। পুলিস জানিয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিক বোঝাই বাসটি ঝাড়খণ্ডের পাকুর থেকে মালদহ ও উত্তর দিনাজপুর জেলার উপর দিয়ে দিল্লির উদ্দেশে যাচ্ছিল। দুর্ঘটনাগ্রস্ত শ্রমিক শ্যামল মালো বলেন, আমি ইটাহারের নন্দনগ্রামের বাসিন্দা। বাসটি আমাদের মতো শ্রমিকদের বিভিন্ন জায়গা থেকে তুলে নিয়ে দিল্লির উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। গাজোল, হরিশ্চন্দ্রপুর, ময়না, ইটাহার সহ বিভিন্ন এলাকার শ্রমিক ও তাঁদের পরিবার-পরিজনরা মিলিয়ে বাসটিতে ৭০ থেকে ৭৫ জন যাত্রী ছিলেন। আমি বাসে ওঠার কিছু সময় পরই দুর্ঘটনাটি ঘটে। কপাল জোরে বেঁচে গিয়েছি। আমি দিল্লিতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে যাচ্ছিলাম। বাসটি যথেষ্ট জোরে চলছিল। জাতীয় সড়ক বেহাল থাকায় চালক বাসটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি।
রূপাহারের বাসিন্দা রামহরি মণ্ডল ও ব্রজগোপাল বিশ্বাস বলেন, জাতীয় সড়কের বেহাল দশার জন্য প্রায়ই এখানে ছোটোখাটো দুর্ঘটনা ঘটে। আমরা ভেবেছিলাম, মোটর বাইক বা এই জাতীয় কোনও দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু প্রচণ্ড চিৎকার, চেঁচামেচি শুনে বাইরে এসে দেখি, একটি বাস নয়ানজুলিতে উল্টে গিয়েছে। এরপর অন্যান্য বাসিন্দা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। খবর পেয়ে রায়গঞ্জ পুলিস জেলার সুপার মহম্মদ সানা আখতার, ডিএসপি রিপন বল, রায়গঞ্জের মহকুমা শাসক অর্ঘ্য ঘোষ, রায়গঞ্জ পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান অরিন্দম সরকার সহ অনান্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন।
অরিন্দমবাবু বলেন, জাতীয় সড়ক বেহাল থাকার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে আমার ধারণা। রুজিরুটির আশায় শ্রমিকরা ভিন রাজ্যে কাজের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই বেঘোরে প্রাণ গেল কয়েকজনের। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে মৃত শ্রমিকদের পরিবারপিছু আর্থিক ক্ষতিপূরণের দাবি রাখছি। ডিএসপি রিপন বল বলেন, শ্রমিক বোঝাই বাসটি জাতীয় সড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের নয়ানজুলিতে উল্টে যায়। বাসে থাকা সমস্ত যাত্রীকে দ্রুততার সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে। কী করে এই ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অন্যদিকে, এদিন সকাল থেকেই ঘটনাস্থলে প্রচুর মানুষ ভিড় জমান। নয়ানজুলিতে কোনও মৃতদেহ আছে কি না, তা নিশ্চিত হতে তল্লাশিতে নামে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। নামানো হয় ডুবুরি। দপ্তরের আধিকারিক রঞ্জিত মণ্ডল বলেন, দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি চালিয়েও কোনও মৃতদেহ পাওয়া যায়নি। তবু আমরা পাম্পের সাহায্যে সমস্ত জল অন্যত্র সরিয়ে তল্লাশি চালানোর চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যে তল্লাশি চালিয়ে বাসে থাকা যাত্রীদের ব্যাগ, নানা ধরনের পোশাক, রাজমিস্ত্রিদের বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি, শুকনো খাবার পাওয়া গিয়েছে। নয়ানজুলিতে তল্লাশি চলছে। নিজস্ব চিত্র