বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক এস পন্নমবালম বলেন, বিষয়টি নজরে রয়েছে। পুজোর আগেই এ ব্যাপারে জেলাজুড়ে সচেতনতামূলক প্রচার অভিযানে নামা হবে। একইসঙ্গে মাস্ক পরা সহ কোভিড বিধি কার্যকরী করতে নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।
জেলায় কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের দাপট অনেকটাই কমেছে। নিয়ম করে টিকাকরণ কর্মসূচিও চলছে। তা হলেও জেলায় এবার কোভিড সংক্রমণ পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৩-১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাতদিনে জেলায় সংক্রামিত হয়েছেন ১৭৬ জন। যারমধ্যে ১৫ সেপ্টেম্বর সর্বাধিক সংক্রামিত হন, ৪২ জন। এর বাইরে কোনওদিন ১৯, আবার কোনও দিন ২২, ২৩, আবার কোনও দিন ২৮ জন সংক্রামিত হয়েছেন। এমন প্রেক্ষাপটে কোভিডের তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আশঙ্কা ছড়িয়েছে। মাঝে কয়েকদিন অন্যান্য জেলায় মতো এখানেই শিশুরা জ্বর, সর্দি, কাশিতে আক্রান্ত হয়। এতকিছুর পরও জেলাবাসীর টনক নড়েনি। কোভিড বিধি মানা নিয়ে এখনও বহু মানুষের অনীহা রয়েছে।
প্রতিদিনই শিলিগুড়ি শহরের বিধান মার্কেট, হকার্সকর্নার, মহাবীরস্থান বাজার, চম্পাসারি বাজার, হিলকার্ট রোড সংলগ্ন বিভিন্ন বাজারে মাস্ক ছাড়াই ভিড় করছেন বাসিন্দারা। কোর্টেও মাস্ক না পরে যাচ্ছেন অনেকে। এছাড়া মাস্ক ছাড়াই টোটো, অটো ও বাসে চাপছেন অধিকাংশ যাত্রী। অনেকে আবার মাস্ক নাকের নীচে থুতনিতে নামিয়ে রাখছেন। আবার কেউ কেউ মাস্ক জামা-প্যান্টের পকেটে রাখছেন। মহিলারা মাস্ক রাখছেন পার্স ব্যাগে। কেউ কেউ বাজার করার সময় কিংবা জরুরি কাজে পুরসভা ও সরকারি অফিসে মাস্ক পরছেন। সংশ্লিষ্ট জায়গাগুলি থেকে বেরিয়েই তাঁরা খুলে ফেলছেন মাস্ক। রাস্তার মোড়ে অথবা চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে বিনা মাস্কে আড্ডা দিচ্ছেন অনেকে। আর নিয়ম করে হাত স্যানিটাইজ করার বালাই অনেকের মধ্যেই নেই।
সোমবার বিধান মার্কেটে কেনাকাটার ফাঁকে এক গৃহবধূ বলেন, মাস্ক সঙ্গে রেখেছি। অস্থির লাগছে, তাই পরিনি। শিলিগুড়ি কোর্ট চত্বরে এক যুবক বলেন, ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ হয়ে গিয়েছে। কাজেই করোনা আর কিছু করতে পারবে না। তা সবসময় মাস্ক পরছি না। মাটিগাড়া-কোর্ট মোড় রুটের একটি অটোর দু’জন যাত্রী বলেন, দীর্ঘক্ষণ মাস্ক পরে থাকতে বিরক্ত লাগে। তাই মাস্ক থুতনিতে নামিয়ে রেখেছি।
দু’দিন আগে বিশ্বকর্মা পুজোর মণ্ডপে এবং প্রতিমা বিসর্জনের সময় আরও ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখা যায়। পুজোর উদ্যোক্তা ও দর্শনার্থীদের মধ্যে মাস্ক পরার কোনও বালাই ছিল না। এমনকী ডিজে, বাজনা, মাইক বাজিয়ে, আবির খেলে প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রা করা হয়। মাস্ক পড়া তো দূরের কথা শোভাযাত্রায় কারও মধ্যে শারীরিক দূরত্বও বজায় ছিল না।
শারদ উৎসবের ২১ দিন আগে এ নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন চিকিৎসকরা। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ারর্সের ডিন ডাঃ সন্দীপ সেনগুপ্ত বলেন, কোনও উৎসব বা বড় ধরনের জমায়েতের পর কোভিড সহ যেকোনও ধরনের ভাইরাস ঘটিত রোগ অতিরিক্ত মাত্রায় ছড়ায়। তাই পুজোর আগেই সকলকে সতর্ক হতে হবে। ভ্যাকসিন হয়ে গেলেও মাস্ক পরতে হবে। তাছাড়া কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা রয়েছে। জেলার উপ মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক-২ ডাঃ তুলসী প্রামাণিক বলেন, কোভিড বিধি মেনে না চললে ভয়ঙ্কর বিপদ হবে। তাই রাজ্য সরকারের পরামর্শ মতো সকলকে সঠিকভাবে মাস্ক পরে বাড়ি থেকে বেরতে হবে।