নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ি শহরে জমির অধিকার পাবে আরও দেড় হাজার পরিবার। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে,ওই তালিকায় উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দারা রয়েছেন। তাঁদের পুজোর আগেই জমির পাট্টা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। বাকিদের এ বছরের নভেম্বর মাসের মধ্যে জমির পাট্টা কিংবা লিজ ডিড দেওয়া হবে। এর বাইরে নিজভূমি-নিজগৃহ প্রকল্পের উপভোক্তাদের চিহ্নিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের সঙ্গে যৌথ সমীক্ষায় নামবে শিলিগুড়ি পুরসভা। সংশ্লিষ্ট দুই জেলার ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে পুরকর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান গৌতম দেব বলেন, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের পতিত জমিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারীদের জমির অধিকার দিচ্ছে রাজ্য সরকার। সেই মতো এই শহরেও বহু মানুষ জমির পাট্টা পেয়েছে। এখনও কয়েক হাজার মানুষ সেই অধিকার পায়নি। চলতি মাস থেকেই তাঁদের মধ্যে জমির পাট্টা প্রদান করা হবে। নভেম্বর মাসের মধ্যে দেড় হাজার পরিবারকে জমির অধিকার প্রদানের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এদিন শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ির আর্বান ল্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে এমন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলার অংশ নিয়ে শিলিগুড়ি পুরসভা গঠিত। এই শহরে উদ্বাস্তু কলোনি ও বস্তির সংখ্যা অসংখ্য। কিছু বস্তি রেলের জমিতেও গড়ে উঠেছে। উদ্বাস্তু কলোনি ও বস্তিবাসীদের মধ্যে জমির পাট্টা প্রদানের দাবি বহুদিনের। গত দু’বছরে কয়েকশো উদ্বাস্তু পরিবারকে জমির পাট্টা দেওয়া হয়েছে। এবার আরও কিছু উদ্বাস্তু পরিবারকে জমির অধিকার দেওয়া হবে। শিলিগুড়ি পুরসভার ৩৩টি ওয়ার্ড দার্জিলিং জেলার অংশ। এখানে বাঘাযতীন, ডাবগ্রাম, জ্যোতিনগর, নতুনপাড়া সহ ২৩টি উদ্বাস্তু কলোনি রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কলোনিগুলি থেকে জমির পাট্টার জন্য ভূমিদপ্তরের উদ্বাস্তু, ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগে আবেদন পড়েছে ৩০০টি। কিন্তু, আবেদনকারীদের অনেকেই এখনও পর্যন্ত উদ্বাস্তু সংক্রান্ত প্রমাণপত্র দাখিল করতে পারেনি। যা জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে নিয়ে হয়। সবকিছু ঠিকঠাক চললে আগামী ২৪ এবং ২৭ সেপ্টেম্বর ক্যাম্প করে আবেদনকারীদের মধ্যে সেই সার্টিফিকেট প্রদান করবে পুরকর্তৃপক্ষ। এরপরই তাঁদেরকে জমির নিঃশর্ত দলিল বা পাট্টা প্রদান করা হবে। প্রশাসনের আধিকারিকরা বলেন, পুজোর আগেই এই প্রক্রিয়া শেষ করার চেষ্টা চলছে। পুরসভার বাকি ১৪টি ওয়ার্ড জলপাইগুড়ি জেলার অংশ। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট এলাকায় ৪১ এবং ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় ৬৪১ জন বাসিন্দা দীর্ঘদিন ধরে জমির পাট্টার দাবি করছেন। যারমধ্যে ৪৫৮ জনের পাট্টা তৈরি হয়েছে। বাকি ১৮৩ জন বাণিজ্যিক কাজের জন্য পাট্টার আবেদন করেছেন। রাজ্য সরকারের নির্দেশ মতো তাঁদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে পুরসভা। এছাড়া ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে পুরসভার নিজস্ব জমিতে ৯২টি, উদ্বাস্তু কলোনিতে ৪২টি এবং ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে ২০২টি পরিবার রয়েছে। শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান গৌতম দেব বলেন, পুরসভার নিজস্ব জমিতে এবং উদ্বাস্তু কলোনিতে বসবাসকারীদের শীঘ্রই পাট্টা দেওয়া হবে।
এর বাইরে নিজভূমি-নিজগৃহ প্রকল্পে ভূমিহীনদের পুনর্বাসন দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে,অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল এবং ভূমিহীনদের নিজভূমি-নিজগৃহ প্রকল্পে জমির পাট্টা দেওয়া হবে। এ জন্য উপভোক্তা ও জমি চিহ্নিত করতেই দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলা ভূমিদপ্তরের সঙ্গে যৌথ সমীক্ষা চালানো হবে। চলতি মাসেই এই সমীক্ষা শুরু হবে।