পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
বনদপ্তরের বৈকুণ্ঠপুর ডিভিশনের এডিএফও জয়ন্ত মণ্ডল বুধবার বলেন, ধৃতদের মধ্যে অভিমন্যু মাজি নিজেকে শুল্কদপ্তরের এবং দেবাশিস ধর জিএসটির সুপারিন্টেন্ডেন্ট বলে পরিচয় দিয়েছেন। মেঘালয় থেকে ওই বিপুল পরিমাণ সেগুন কাঠ শিলিগুড়িতে এনে কয়েকদিন রাখার পর মঙ্গলবার রাতে কলকাতায় পাচার করা হচ্ছিল। বাজেয়াপ্ত কাঠের বাজার মূল্য ২৫ লক্ষ টাকারও বেশি। এদিকে, ধৃত অভিমন্যু মাজি দাবি করেন, তাঁদের মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি বলেন, কাঠ পাচার হচ্ছে শুনে এসেছিলাম। এডিএফও জয়ন্ত মণ্ডল বলেন, এ ধরনের দাবির পক্ষে ধৃতরা কোনও বৈধ কাগজ দেখাতে পারেননি। দাবি করলেই হবে না, তা প্রমাণ করতে হবে। এদিকে, চেষ্টা করেও দেবাশিস ধরের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ধৃতদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে জলপাইগুড়ি আদালত। বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মেঘালয় থেকে ওই সেগুন কাঠ এনে শিলিগুড়িতে শুল্কদপ্তরের ব্যবহৃত একটি গোডাউনে রাখা হয়েছিল। বিশেষ সূত্রে এই খবর পাওয়ার পর বনদপ্তর নজরদারি শুরু করে। সেই মতো মঙ্গলবার রাত দেড়টা নাগাদ শিলিগুড়ি থেকে কলকাতায় পাচারের পথে শহরের জলপাই মোড়ের কাছে ট্রাকটিকে আটকে বনদপ্তরের কর্মীরা তল্লাশি চালান। এতেই চোরাই সেগুন কাঠ ধরা পড়ে। অভিযোগ, চোরাই কাঠ বোঝাই গাড়ির সঙ্গে আলাদা একটি ‘নীলবাতি’র গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন অভিমন্যু মাজি ও দেবাশিস ধর। তাঁদের গ্রেপ্তার করার পর ওই গাড়িটিও বাজেয়াপ্ত করেন বনদপ্তরের অফিসাররা। কাঠ বোঝাই ট্রাকে থাকা আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই পাঁচজনের মধ্যে একজনের বাড়ি রাজস্থান ও আরএকজনের বাড়ি গোয়া। বাকি তিনজনের বাড়ি শিলিগুড়ি শহরের লাগোয়া এলাকায়। শুল্কদপ্তরের আধিকারিক পরিচয় দেওয়া দেবাশিস ধরের বাড়ি গেটবাজারের কাছে সুকান্তপল্লিতে। জিএসটির আধিকারিক অভিমন্যু মাজি শিলিগুড়ির দাগাপুরের বাসিন্দা। বনদপ্তর সূত্রে দাবি করা হয়েছে, জেরায় কাঠ পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন তাঁরা। ওই দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, দেবাশিস ধর অনেকদিন ধরেই সাসপেন্ড রয়েছেন। এডিএফও জয়ন্ত মণ্ডল বলেন, ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করে জানার চেষ্টা করা হবে, ওই চক্রে আর কারা জড়িত। তদন্তের স্বার্থে আমরা শুল্কদপ্তর ও জিএসটি কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা করছি। শিলিগুড়িকে করিডর করে অনেকদিন ধরেই কাঠ সহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী পাচার চক্র সক্রিয়। মাদক, সোনার পাশাপাশি কাঠ ও বন্যপ্রাণীর দেহাংশ এই করিডর দিয়ে পাচার হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে বনদপ্তর অভিযান চালিয়ে পাচারকারীদের ছক বানচাল করে দিয়েছে। উদ্ধার হয়েছে মূল্যবান চোরাই কাঠ, বন্যপ্রাণীর দেহাংশ। সেভাবেই বিশেষ সূত্রের খবরের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে শিলিগুড়ির জলপাই মোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রচুর সেগুন কাঠ উদ্ধার করে বনদপ্তর। কিন্তু, এই কাঠ পাচারকাণ্ডে কেন্দ্রীয় রাজস্ব দপ্তরের দু’জন আধিকারিক ধরা পড়বেন, এটা কেউ ভাবেতেই পারেননি। ফলে তাঁদের গ্রেপ্তারের খবরে শোরগোল পড়ে যায়। বৈকুণ্ঠপুর ডিভশনের এডিএফও বলেন, সরকারি কর্মীদের কাজ সম্পদ রক্ষা করা। কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ উঠলে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা তাঁদের কাছ থেকে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার কাঠ উদ্ধার করেছি। সেগুলি মেঘালয় থেকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। আরও কেউ যুক্ত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি শুল্ক ও জিএসটি দপ্তরের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র