কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
প্রসঙ্গত, গত পাঁচমাস ধরে পুরসভার প্রায় ৭০০ অস্থায়ী শ্রমিক মজুরি পাচ্ছেন না। সেই অস্থায়ী শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার প্রক্রিয়া চালু করতে গিয়ে পুরসভা সুপারভাইজারদের কাছ থেকে কাজে হাজির থাকা অস্থায়ী শ্রমিকদের খোঁজ শুরু করে। আর সেই খোঁজ শুরু হতেই ভূতুড়ে শ্রমিকের হদিশ মিলেছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ৭০০ অস্থায়ী শ্রমিকের মধ্যে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪৫০ অস্থায়ী শ্রমিকের তথ্য মিলেছে। সুপারভাইজারদের মাধ্যমে আরও কিছু শ্রমিকের তথ্য এখনও আসছে। তবে সেই সংখ্যাটি কোনওভাবে ৫০০ ছুঁতে পারে। অর্থাৎ দু’শতাধিক অস্থায়ী শ্রমিকের কোনও হদিশ মিলছে না। আর ঠিক এই পরিস্থিতিতেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, বিগত দিনে প্রতিমাসে যদি অতিরিক্ত কমপক্ষে ২০০ জন ভূতুড়ে অস্থায়ী শ্রমিক পুরসভা থেকে মজুরি তোলে, তবে প্রতিমাস প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা করে পুরসভার ব্যয় হয়ে গিয়েছে।
আগামীদিনে এই ভূতুড়ে শ্রমিকদের ব্যাপারে পুরসভা কী ব্যবস্থা নেবে, এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও কোচবিহার পুরসভার প্রশাসক তথা কোচবিহারের মহকুমা শাসক শেখ রাকিবুর রহমানের দাবি, সবদিক খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোমবার এসডিও শেখ রাকিবুর রহমান বলেন, আমরা এদিন পর্যন্ত সুপারভাইজারদের কাছ থেকে প্রায় ৪৫০ জন অস্থায়ী শ্রমিকের খোঁজ পেয়েছি। তাঁদের বকেয়া মজুরি দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। আরও কিছু অস্থায়ী শ্রমিকের নাম এই তালিকায় আসবে ধরে নিচ্ছি। পরবর্তীতে যাঁদের নাম যুক্ত হবে, তাঁদের জন্য আলাদা করে মজুরির বিল বানানো হবে। এর বাইরে যারা থাকবে, তারাই ভূতুড়ে অস্থায়ী শ্রমিক হিসেবে চিহ্নিত হবে। এর মাধ্যমে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ বাঁচবে তা দিয়েই বকেয়া মজুরি দিতে পারব। ওই ভূতুড়ের তালিকায় যারা ছিল, তাদের নাম কীভাবে এল সেটাও পরবর্তীতে খতিয়ে দেখা হবে।
কোচবিহার পুরসভার অস্থায়ী শ্রমিকরা এ বছরের জানুয়ারি মাস থেকে মজুরি পাচ্ছেন না। পুরসভার সাফাই বিভাগ, টোলগেট, অফিস স্টাফ, বাজার সুপারভাইজার, ড্রাইভার, গেস্ট হাউসের কর্মী সহ একাধিক পদে এই অস্থায়ী শ্রমিকরা নিযুক্ত রয়েছেন। এত শ্রমিক খাতায়কলমে দেখানো হলেও কোচবিহার শহরে জঞ্জাল সাফাই ঠিকমতো কেন হচ্ছে না, নিকাশি নালা নিয়মিত কেন পরিষ্কার করা হচ্ছে না, এমন অভিযোগ সম্প্রতি সামনে আসে। এ নিয়ে বিরোধীরাও সরব হন। তারপরেই পরসভা নড়েচড়ে বসে। এবার অস্থায়ী শ্রমিকদের তথ্য যাচাই করতে গিয়েই এত শ্রমিকের হদিশ মিলছে, যাদের কোনও বাস্তব অস্তিত্বই নেই।
এই অবস্থাতেই সম্প্রতি পুরসভায় প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এরপর অস্থায়ী শ্রমিকদের কাজে লাগানো, বকেয়া মজুরি মেটানো প্রভৃতি বিষয়গুলি সামনে আসতেই প্রশ্ন উঠতে থাকে, কতজন অস্থায়ী শ্রমিক সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। এঁদের মধ্যে সকলেই কি নিয়মিত কাজে যোগ দিচ্ছেন? এই সংক্রান্ত খোঁজখবর শুরু হতেই পুরসভা সুপারভাইজারদের কাছ থেকে প্রকৃত অর্থে কাজে হাজির থাকা অস্থায়ী শ্রমিকদের হিসেব তলব করে। আর সেই হিসেব সামনে আসতেই এমন চিত্র উঠে এসেছে।
পুরসভা আগেই জানিয়েছিল, প্রায় ৭০০ অস্থায়ী শ্রমিককে মজুরি দিতে প্রতি মাসে তাদের প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা খরচ হয়। সেই হিসেবে ২০০ ভূতুড়ে অস্থায়ী শ্রমিক হলে মাসে পুরসভার প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা এখন বেঁচে যাবে।