বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
এদিকে ঝড়ের পর থেকেই ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে আসেন কুমারগঞ্জের ভোটপ্রার্থীরা। বিজেপি প্রার্থী মানস সরকার দলীয় কর্মীদের নিয়ে বালুরঘাট-কুমারগঞ্জ রাজ্য সড়কে পড়ে থাকা গাছ সরান। জখমদের হাসপাতালে পাঠাতে সাহায্য করেন। কুমারগঞ্জের তৃণমূল প্রার্থী তোরাফ হোসেন মণ্ডল রাত থেকেই বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে থাকেন। এদিকে ঝড়ের দাপটে বালুরঘাট, হিলি, কুমারগঞ্জ ও পতিরামে রাজনৈতিক দলের ফ্ল্যাগ-ফেস্টুন ছিঁড়ে যায়। বৃষ্টি হওয়ায় বেশকিছু জায়গায় দেওয়াল লিখনও ধুয়ে গিয়েছে।
কুমারগঞ্জের ভোঁওর গ্রাম পঞ্চায়েতের খাঁড়িপাড়ায় ইটের দেওয়াল ভেঙে চাপা পড়ে জখম হন মেলছো সরেন (৬০)। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে কুমারগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে জানান। তাঁর স্বামী রবি মার্ডিও গুরুতর জখম হন। ওই পরিবারের আরও দুই শিশু ও বৃদ্ধ দম্পতির মেয়ে জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। পতিরামের রামপুর কিসমত গ্রামে মাটির দেওয়াল চাপা পরে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। তাঁর নাম গফুর আলি ফকির (৬৫)। মৃতের স্ত্রী সালেমা বিবি বলেন, ঝড়ের সময় দেওয়াল চাপা পড়ে স্বামীর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার দক্ষিণ দিনাজপুরের ঝড় বিধ্বস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন বিজেপি এমপি সুকান্ত মজুমদার। পরে তিনি বলেন, দু’জনের মৃত্যু খুবই দুর্ভাগ্যজনক। ইন্দিরা আবাস যোজনার বরাদ্দে বানানো বাড়িটি নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সম্ভবত করা হয়েছিল। ভোটের সময় আমরা সাহায্য করতে পারব না। তবে প্রশাসনকে সাহায্যের অনুরোধ জানাব। তৃণমূল প্রার্থী তোরাফ হোসেন মণ্ডল বলেন, রাত থেকেই বিভিন্ন এলাকায় ঘুরছি। বাড়িঘর হারিয়ে গোপালগঞ্জ পার্টি অফিসে অনেকে আশ্রয় নিয়েছেন। আমরা এই মুহূর্তে কোনও সাহায্য করতে পারছি না। তবে মানুষের সঙ্গে আছি। বিজেপির অভিযোগের কোনও সারবত্তা নেই। এটা নিছকই দুর্ঘটনা। আমরা পরিবারটির পাশে আছি।
কুমারগঞ্জের বিডিও শেয়াং তামাং বলেন, দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। বিস্তীর্ণ এলাকায় লোডশেডিং হয়ে যায়। রাস্তা থেকে গাছ সরানো হয়েছে। দপ্তরের কর্মীদের ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট বানাতে বলেছি। রাত ১০টা নাগাদ কুমারগঞ্জের রামকৃষ্ণপুর, মোহনা, গোপালগঞ্জ, ভোঁওর, বটুন সহ বিভিন্ন এলাকায় উপর দিয়ে ঝড় বয়ে যায়। এছাড়াও বালুরঘাট ব্লকের বোল্লা, পতিরাম, গোপালবাটি এবং হিলি ব্লকের বিনশিরা সহ বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ে ক্ষতি হয়। কুমারগঞ্জে রাজ্য সড়কের ধারে একটিও বিদ্যুতের পোল দাঁড়িয়ে নেই। কৃষিজ ফসলের ক্ষতির হিসেব কষছে প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার রাতের ঝড়ে উত্তর দিনাজপুর জেলার করণদিঘি ব্লকের দোমোহনা, বিন্দাবাড়ি, মোহনপুর, ভুলকি, সাবধান, মাদারগাছি সহ বেশকিছু এলাকায় বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি হেলে পড়েছে। অন্যদিকে, মালদহের ইংলিশবাজার, গাজোল, কালিয়াচক বামনগোলা ব্লকে বৃহস্পতিবার রাতে ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হয়। আম চাষে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। এখানেও ঝড়ের স্থায়িত্ব ২০ মিনিট ছিল। বেশকিছু কাঁচাবাড়ি ভেঙে পড়ে। পুরাতন মালদহ শহরের মঙ্গলবাড়ি, সাহাপুর, বামনগোলার পাকুয়া সদর, মির্জাপুর গ্রামে অনেকেরই বাড়ির টিনের চাল উড়ে যায়। হাওয়ার দাপটে ঘন ঘন লোডশেডিং হয়। জেলা উদ্যানপালন দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর কৃষ্ণেন্দু নন্দন বলেন, ঝড়ে আম চাষে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তবে বৃষ্টিতে আমের উপকার হয়েছে। নিজস্ব চিত্র