কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব গত জানুয়ারি মাসে প্রাক্তন মন্ত্রী তথা ইংলিশবাজার পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীকে দলের জেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়। তার আগে বেশ কিছুদিন দলের সাংগঠনিক কাজের ক্ষেত্রে নিজেকে খানিকটা গুটিয়ে রাখলেও নতুন পদ পেয়ে ফের সক্রিয় হয়ে ওঠেন কৃষ্ণেন্দু। বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতেও শুরু করেন। তবে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে ইংলিশবাজারের বিধায়ক তথা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান নীহাররঞ্জন ঘোষের বাড়িতে হামলার ঘটনায় কৃষ্ণেন্দুবাবুর নাম জড়িয়ে যায়। কৃষ্ণেন্দুবাবু নিজেই হামলার সময় হাজির ছিলেন বলে তাঁর বিরুদ্ধে সরাসরি পুলিসের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বিধায়ক নীহারবাবু। পুলিস বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে। আবার বিধায়কের পরিবারের বিরুদ্ধে এক পানীয় জল সরবরাহকারী ও তাঁর স্ত্রীকে মারধরের পাল্টা অভিযোগ তোলেন কৃষ্ণেন্দুবাবু। সেই ঘটনার সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই তাঁর নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহারের বিষয়টি সামনে আসায় রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে।
এনিয়ে কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমি তিনজন নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে পুরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডে যাচ্ছিলাম। আচমকা এক নিরাপত্তারক্ষীকে ফোন করে জানানো হয় যে, তাঁকে ওই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। এরপর আমি দলীয় কার্যালয়ে ফিরে তাঁদের তিনজনকেই সেদিনের মতো রিলিজ করে দিয়েছি। এদিন সকাল থেকে একজন নিরাপত্তারক্ষীও আমার বাড়িতে বা কার্যালয়ে আসেননি। বিষয়টি দলের নেতৃত্বকেও জানিয়েছি। তিনি আরও বলেন, বহুবার আমার উপরে হামলা হয়েছে। খুনের চেষ্টাও হয়েছে। তাই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর আমল থেকে আমি নিরাপত্তারক্ষী পাই। মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর আমলে নিরাপত্তারক্ষী বাড়ানো হয়েছিল। তবে বিষয়টি নিয়ে আমার কোনও আক্ষেপ নেই। দলের কর্মীরাই আমার প্রকৃত নিরাপত্তারক্ষী। শত্রুরা আমাকে খুনের চেষ্টা করতেই পারে, কিন্তু জীবনে একবারই মৃত্যু হয়। কে, কবে মারা যাবে, তা ঈশ্বরই ঠিক করে রাখেন। তাই নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহার নিয়ে ভাবছি না।
অন্যদিকে, বিষয়টি নিয়ে মালদহের পুলিস সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, জেলায় যাঁরা নিরাপত্তারক্ষী পান, পুলিস নিয়মিত তাঁদের নিরাপত্তা বিষয়ক পর্যালোচনা করে থাকে। ওই পর্যালোচনার পরিপ্রেক্ষিতেই প্রাক্তন মন্ত্রীর একজন নিরাপত্তারক্ষী কমানো হয়েছে। তবে তাঁর জন্য দু’জন নিরাপত্তারক্ষী এখনও বরাদ্দ রয়েছে। বিষয়টি একটি রুটিন কাজ। পুলিস সূত্রে জানানো হয়েছে, মালদহে যাঁরা সরকারি নিরাপত্তা পান, তাঁদের সকলেরই দু’জন করে রক্ষী থাকে। শুধুমাত্র কৃষ্ণেন্দুবাবুরই তিনজন রক্ষী ছিল। নিরাপত্তা বিষয়ক পর্যালোচনা করার পরেই একজনকে সরানো হয়েছে। এই বিষয়টির আলাদা কোনও তাৎপর্য নেই বলেও পুলিস সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
এদিকে, কৃষ্ণেন্দুবাবুর নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহার সংক্রান্ত বিতর্ক সামনে আসতেই এদিন রাজনৈতিক জল্পনা শুরু হয়ে যায় মালদহে। আলোচনা শুরু হয়, তবে কি শেষ পর্যন্ত দল ছাড়ছেন কৃষ্ণেন্দু? তিনি বিজেপিতে নাকি ফের কংগ্রেসে যোগ দেবেন, তা নিয়েও চর্চা শুরু হয় বিভিন্ন মহলে। এ প্রসঙ্গে প্রাক্তন মন্ত্রী বলেন, এর আগেও এনিয়ে বহুবার জল্পনা হয়েছে। আমি সেসব খারিজও করেছি। বারবার জল্পনা ছড়ালে তার জবাব দেওয়ার দায় আমার নেই। তবে কৃষ্ণেন্দুর ঘনিষ্ঠ মহলের বক্তব্য, নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা যখন বাড়ানো হয়েছিল, তখন পুলিসের তরফ থেকে ফোনে তাঁকে জানানো হয়েছিল। নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহারের সময়ও পুলিসকর্তাদের উচিত ছিল তাঁকে ফোনে বিষয়টি জানানো।