গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
তাঁদের মধ্যে অশোক রায় শিলিগুড়ি শহরের প্রমোদনগর কলোনির বাসিন্দা। তিনি অ্যাম্বুলেন্স চালক। তাঁর পরিবারে স্ত্রী ও তিন ছেলেমেয়ে রয়েছে। এদিন সকাল ১০টা ৫০ মিনিট নাগাদ তিনি শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে এসে ভ্যাকসিন নেন। তিনি বলেন, শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে করোনা রোগীদের নিয়মিত কোভিড হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছি। তাই পরিবারের লোকদের উৎসাহে ভ্যাকসিন প্রদানের জন্য শুক্রবার স্বাস্থ্যদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করি। এদিন ভ্যাকসিন দিয়ে করোনার বিরুদ্ধে চলা যুদ্ধের শেষ ধাপে অংশ নিলাম।
আরএক করোনা যোদ্ধা বসুধা দাস। তিনি শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের নার্স। শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁর বাড়ি। তিনি সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবাশুশ্রূষা করেন। দু’মাস আগে তিনি নিজেও করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। এদিন ভ্যাকসিন নেওয়ার পর তিনি বলেন, প্রতিষেধক নেওয়ার জন্য স্বাস্থ্যদপ্তর ফোনে জানিয়েছিল। সেই মতো ভ্যাকসিন নিলাম। কোনও অসুবিধা হয়নি। তবে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই কিন্তু এখানেই শেষ নয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকলকে নিয়মিত মাস্ক পরতে হবে। হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে।
আর একজন কোভিড যোদ্ধা হলেন ডাঃ সঞ্চারি ঘোষ। তিনি কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজের ফিজিওলজি ডিপার্টমেন্টের ডেমোনেস্ট্রেটর। তিনি বলেন, প্রথম সারির করোনা যোদ্ধা আমি। এতদিন করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করেছি, ভয় পাইনি। তাই ভ্যাকসিন নিতে কীসের ভয়? ভ্যাকসিন নিয়ে খুব ভালো লাগছে। আরএক অন্যতম করোনা যোদ্ধা হলেন আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের সাফাইকর্মী চন্দন বাসফোর।
সকাল ১০টা নাগাদ তিনি ভ্যাকসিন নেন। বলেন, অন্যান্য ইঞ্জেকশন যেভাবে নিতে হয় এই ভ্যাকসিনও ঠিক সেইভাবে নিলাম। ভয়ের কিছু নেই। ব্যথা বা যন্ত্রণাও হয়নি।
শুধু এই করোনা যোদ্ধারা নন, এদিন উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলায় সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক, নার্স, সাফাইকর্মী সহ স্বাস্থ্যকর্মীরা ভ্যাকসিন নেন। তাঁদের মধ্যে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান ডাঃ রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য, আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ পার্থপ্রতিম দাস, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসার ডাঃ কল্যাণ খান, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ভিআরডিএলের কোভিড-১৯ সোয়াব টেস্টের ইনচার্জ শান্তনু হাজরা প্রমুখ ছিলেন। সকলেরই বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে ভ্যাকসিনের অপেক্ষা করছি। এবার ভ্যাকসিন এসেছে। এটা করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অন্যতম অস্ত্র। তাই নির্ভয়ে ভ্যাকসিন নিয়েছি। এ ব্যাপারে সকলেরই এগিয়ে আসা উচিত। এখানে ভয় বা উদ্বেগের কিছু নেই।
রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তের মতো সকাল ১০টায় উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলায় বিভিন্ন কেন্দ্রে টিকাকরণ কর্মসূচির সূচনা হয়। প্রতিটি কেন্দ্রের প্রবেশদ্বারে মোতায়েন করা হয় পুলিস। টিকাকরণ ঘরের পাশেই আলাদা পর্যবেক্ষণ কক্ষ ছিল। ঘরের বাইরে রাখা ছিল জায়ান্ট স্ক্রিন। ভোট গ্রহণের কায়দায় পরিচয়পত্র যাচাই করে কেন্দ্রে প্রবেশ করানো হয়। স্বাস্থ্যদপ্তরের আধিকারিকরা বলেন, ভ্যাকসিন গ্রহণের পর কারও মধ্যে কোনও প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায়নি। এদিন রাত পর্যন্ত কেউ অসুস্থ হননি।