বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
কোনওরকম রাখঢাক না করেই বালুরঘাট টাউন বিজেপি সভাপতি সুমন বর্মন বলেন, কেন্দ্রীয়স্তর থেকে বুথ স্তর পর্যন্ত বিজেপির কার্যকর্তাদের একটাই লক্ষ্য, তা হল ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে জয়। বিয়েবাড়িতে অনেক মানুষ আসেন। তাই সেখানে গিয়েও এব্যাপারে প্রচার সেরেছি। কনের হাতে প্রচারের পুস্তিকা ও গেরুয়া উত্তরীয় তুলে দিয়ে নবদম্পতিকে আশীর্বাদ জানিয়েছি। আমাকে তো ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আমন্ত্রণ পেয়ে ব্যক্তিগতভাবেই এই অভিনব কায়দায় প্রচার করেছি।
অন্যদিকে, নবদম্পতি দিবাকর ঘোষ ও শুভশ্রী ঘোষ সরকার বলেন, বিয়েতে অনেক উপহার পেয়েছি। কিন্তু এই ধরনের উপহার পেয়ে একটু অবাক হয়ে যাই। তবে আমরা ওই ঘটনা নিয়ে কোনও রাজনৈতিক মন্তব্য করতে চাই না। সুমনবাবু আমাদের পূর্ব পরিচিত। আমরা বিষয়টিকে সাধারণভাবেই নিয়েছি। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এধরনের কোনও প্রচারের নির্দেশ দলীয় নেতৃত্বের তরফে কাউকে দেওয়া হয়নি। সুমনবাবু যা করেছেন, সেটা তাঁর নিজস্ব সিদ্ধান্ত। এবিষয়ে বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ তথা বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার বলেন, বালুরঘাট টাউন বিজেপির সভাপতি নিজেই প্রচারের এই অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন। নবদম্পতিকে আশীর্বাদ হিসেবে তিনি গেরুয়া উত্তরীয় ও পুস্তিকা দিয়েছেন বলে শুনেছি।
এদিকে, নবদম্পতি এই বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করতে না চাইলেও বিধানসভা ভোটের দোরগোড়ায় ওই ঘটনা নিয়ে শহরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। বিজেপি নেতার এই কীর্তি নিয়ে বাম ও তৃণমূলের তরফে ইতিমধ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। দু’পক্ষেরই বক্তব্য, সামাজিক অনুষ্ঠানেও রাজনৈতিক প্রচার সারতে গিয়ে ওই নেতা একটু বাড়াবাড়ি করে ফেলেছেন। এবিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা কো-অর্ডিনেটর সুভাষ চাকি বলেন, সামাজিক অনুষ্ঠানে গিয়ে এধরনের প্রচার, এটা বাংলার সংস্কৃতি নয়। বাংলার বাইরে থেকে এসে যাঁরা ভোট নিয়ে নির্দেশ দিচ্ছেন, তাঁদের অঙ্গুলিহেলনেই এসব হচ্ছে। বাংলার মানুষ ধান-দুর্বা দিয়ে নবদম্পতিকে আশীর্বাদ করেন। কিন্তু, বিজেপি রাজনীতির স্বার্থে নিজেদের প্রচার পুস্তিকা দিয়ে আশীর্বাদ করছে। এধরনের কাজ সাধারণ মানুষ ভালোভাবে নেবেন না।
আরএসপি’র জেলা কার্যকরী কমিটির সদস্য বিমল সরকার বলেন, রাজনীতি সমাজেরই একটি অংশ। কিন্তু তা বলে বিয়েবাড়িতে গিয়ে বিজেপি নেতৃত্ব বাড়তি উৎসাহে দলের কাজ করতে গিয়ে সমাজ আর রাজনীতি গুলিয়ে ফেলছেন।
জানা গিয়েছে, বালুরঘাট শহরে সিপিএমের লোকাল কমিটির সদস্য সুজন ঘোষের শ্যালিকার বিয়ে ছিল বুধবার। আগে থেকেই সুমনবাবুকে চিনতেন সুজনবাবু। সেই সুবাদেই শ্যালিকার বিয়েতে সুমনবাবুকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এবিষয়ে সুজন ঘোষ বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে সুমনবাবুকে বাড়ির অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। তিনি যা করেছেন, সেটা তাঁর নিজস্ব ব্যাপার।