পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
শীতের সময় অনেকেই মরশুমি ফুলগাছ লাগান। কেউ কেউ লাগান শখে, কেউ বা আবার পেশার তাগিদেই। সেজন্য প্রয়োজন হয় মাটির টবের। তাই এই সময়টায় ফুলগাছ লাগানোর জন্য পোড়া মাটির টবের চাহিদা থাকে বেশি। সম্প্রতি মাটির টবের যোগান দিয়ে সুনাম অর্জন করেছেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার এই দুই এলাকার মৃৎশিল্পীরা। তাঁদের হাতে বানানো টবের খ্যাতি কেবল জেলায় নয়, ছড়িয়ে পড়েছে ভিন জেলা, এমনকি ভিন রাজ্যেও। তাই এখন গঙ্গারামপুর ও বুনিয়াদপুরের শিল্পীদের হাতে বানানো টবের চাহিদা বেড়েছে। সেইমতো যোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা।
ফুলের টব তৈরির সঙ্গে যুক্ত মৃৎশিল্পীদের অধিকাংশ টব পাইকারি দরে বিক্রি করে দিচ্ছেন ভিনরাজ্যের কারবারিদের কাছে। বেশি উপার্জনের আশায় দিনরাত এক করে এখন কাজ করছেন তাঁরা। সাধারণ টবের পাশাপাশি চাহিদা ভালো রয়েছে পোড়া মাটির ডিজাইনার টবেরও। শিল্পীদের দাবি, আগে জেলার ফড়েদের একাংশ তাঁদের থেকে কম দামে টব কিনে সেগুলি চড়া দামে বিক্রি করে দিতেন ভিনরাজ্যের পাইকারদের কাছে। ফড়েদের পকেট ভরলেও শিল্পীদের পেট ভরত না। তাই এখন তাঁরা সরাসরি ভিনরাজ্যের কারবারিদের কাছেই টব বিক্রি করেন।
গঙ্গারামপুরের মৃৎশিল্পী অরূপ পাল বলেন, আমাদের শহরে কয়েকশো শিল্পী রয়েছেন যাঁরা সারা বছর ফুলের টব তৈরি করেন। আমাদের টব ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব, দিল্লির মতো বাইরের রাজ্যে যায়। এছাড়া জেলার মধ্যে এবং দক্ষিণবঙ্গেও টব বিক্রি হয়। শীতের মরশুমে চাহিদা অনেক বেশি থাকে। আমাদের জেলায় সরকারিভাবে মাটির টব বিক্রির কোনও ব্যবস্থা নেই। এই সুযোগে একদল ফড়ে নিজেদের ইচ্ছে মতো দাম দিয়ে আমাদের থেকে টব কিনে নিত। তারপর সেগুলি ভিনরাজ্যে পাঠিয়ে দিত। তাতে আমাদের কোনও লাভ হতো না। তাই এখন আমরা সরাসরি ভিনরাজ্যে পাঠাই।
গঙ্গারামপুর ও বুনিয়াদপুরের মৃৎশিল্পীদের অভিযোগ, জেলায় মাটির জিনিসপত্রের জন্য আলাদা কোনও বাজার নেই। বিক্রির কোনও সুযোগ সুবিধাও নেই। তাই তাঁদের বারবার সমস্যায় পড়তে হয়। মুষ্টিমেয় কিছু মৃৎশিল্পী সরকারি সাহায্য পান। শতাধিক শিল্পী সরকারি সাহায্য ও প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত হয়ে রয়েছেন। সরকার জেলার মাটির টবের সঙ্গে যুক্ত মৃৎশিল্পীদের বাঁচাতে প্রশিক্ষণ দেওয়া ও আর্থিক সহায়তা করার উদ্যোগ নিলে জেলার অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটবে।
জেলা কুটির শিল্প দপ্তরের আধিকারিক অসীম চৌধুরী বলেন, প্রতি বছর আমরা জেলা শিল্প দপ্তরের মাধ্যমে মৃৎশিল্পীদের সরকারি সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা করি। এছাড়া শিল্পীদের সহায়ক যন্ত্রপাতি দেওয়া হয়। শিল্পীরা চাইলে আমরা তাদের আধুনিক প্রশিক্ষণ দিতে পারি। তাহলে তাঁরা আরও ভালো মানের কাজ করতে পারবেন। আগ্রহী শিল্পীরা আমাদের দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে পদক্ষেপ করা যেতে পারে।
এদিকে, মৃৎশিল্পীরা জানিয়েছেন, শীত পড়তেই বিভিন্ন আকৃতির বাহারি ও ডিজাইনার মাটির টব বিক্রি হচ্ছে। আকার ও ডিজাইনের উপর সেগুলির দাম নির্ভর করে। পাইকারদের কাছে ১৫ টাকা থেকে ১০০ টাকা দরে একেকটি টব বিক্রি করছেন মৃৎশিল্পীরা।