নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: জলপাইগুড়ি শহরের মাসকলাইবাড়ি শ্মশানের দু’টি বৈদ্যুতিক চুল্লির মধ্যে একটি বিকল। এমন অবস্থায় যেকোনও দিন সচল চুল্লিটিতে গোলযোগ দেখা দিলে শবদেহ দাহ করার কাজ থমকে যেতে পারে। এদিকে অনেক সময়েই শ্মশানে গিয়ে শবযাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। শীতের রাতে শ্মশানে গিয়ে মশার কামড়ে বসে থেকে শবযাত্রীরা অনেক সময় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। যদিও শ্মশানে কর্মরত পুরসভার কর্মীদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত কর্মচারী না থাকার কারণে তাঁদের অধিকাংশ সময়েই ডিউটি করতে হচ্ছে। কিন্তু এ জন্য অতিরিক্ত বেতন বা ওভারটাইম পাচ্ছেন না তাঁরা। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ জমেছে। তাঁরা সমস্যা মেটানোর দাবি জানিয়েছে পুরসভাকে। পুরসভা অবশ্য শ্মশানের একটি বৈদ্যুতিক চুল্লি বিকল থাকার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছে। সেটি দ্রুত মেরামত করা হবে বলে জানিয়েছে। কর্মীর বিষয়টিও দেখার আশ্বাস দিয়েছে। জলপাইগুড়ি পুরসভার ২৫টি ওয়ার্ড ও আশাপাশের গ্রামাঞ্চলে কেউ মারা গেলে মৃতদেহ মাসকলাইবাড়ি শ্মশানে নিয়ে এসে দাহ করা হয়। অনেক সময় একসঙ্গে পাঁচ-ছ’টি মৃতদেহ চলে এলে তখন সমস্যা হয়। জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য সন্দীপ মাহাত বলেন, শ্মশানের একটি বৈদ্যুতিক চুল্লি কিছুদিন ধরে খারাপ। সেটি সারানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে শ্মশানের দু’টি বৈদ্যুতিক চুল্লির মধ্যে একটি ব্যবহার করা হয়। একটি বৈদ্যুতিক চুল্লি সবসময় ব্যবহার করা হয় না। ওই চুল্লিতেই সমস্যা দেখা দিয়েছে। সবসময় একসঙ্গে বেশি মৃতদেহ আসে না বলে আমাদের একটি চুল্লি দিয়েই কাজ চলে যায়। খুব শীঘ্রই সেটি মেরামত করা হবে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্মশানে প্রতিদিন গড়ে ১০-১৫টি মৃতদেহ আসে। বিভিন্ন সময়ে সেগুলি এলে দাহ করতে তেমন সমস্যা হয় না। তবে চার-পাঁচটি মৃতদেহ একই সময়ে চলে এলে তখনই সমস্যা দেখা দেয়। সেই সময় শবযাত্রীরা সমস্যায় পড়েন। এদিকে একটিমাত্র চুল্লি কাজ করায় যেকোনও দিন সেটি বিকল হলে বা যান্ত্রিক গোলযোগ ধরা পড়লে তখন মৃতদেহ দাহ করার কাজই থমকে যবে এই আশঙ্কায় শ্মশানের কর্মীরাও। এখানে মাত্র দু’জন কর্মী দিনে-রাতে কাজ করেন। তাই তাঁদের সর্বক্ষণই কাজের চাপ থাকে। শ্মশানের পুর কর্মচারীদের দাবি, শীত পড়ায় অনেকেই ঠান্ডায় অপেক্ষা করতে করতে ধৈর্য্য হারান। তখন কেউ কেউ চিৎকার চেঁচামেচি করেন। অনেক সময়ে রাতে হুমকিও দেওয়া হয়। তখন তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন বলে জানিয়েছেন। নিজস্ব চিত্র