পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
উত্তর দিনাজপুর জেলায় গত বছরই প্রথম বিনা কর্ষণে গম চাষের জন্য প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল। তবে তা হয়েছিল কেবল রায়গঞ্জ মহকুমায়। এবছরই প্রথম ইসলামপুর মহকুমাতেও বিনা কর্ষণে গম চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রদর্শনী করে কৃষকদের উৎসাহ দেওয়ার কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন আধিকারিকরা। ইসলামপুরে কৃষি দপ্তরের ফার্মের জমিতে এই পদ্ধতিতে চাষ হয়েছে।
ইসলামপুর ব্লক কৃষি আধিকারিক দীপ সিংহ বলেন, আমরা এবারই প্রথম কৃষি ফার্মের দুই বিঘা জমিতে এই পদ্ধতিতে চাষ করেছি। এই পদ্ধতিতে চাষে উৎপাদন ও লাভ বেশি হয়। প্রথাগত পদ্ধতিতে চাষের চাইতে রোগ পোকার আক্রমণ কম হয়। এছাড়া প্রথাগত পদ্ধতির তুলনায় ৭-১০ দিন আগেই গম পাকে ও ফসল কাটা যায়। কোনও চাষি এই পদ্ধতি. সম্পর্কে জানতে চাইলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেই আমরা পরামর্শ দেব ও সহায়তা করব।
কৃষি দপ্তরের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, ধান কাটার পরে মাটি নরম থাকে। তাই ধান চাষের পরে গম চাষের জন্য জমি তৈরি করতে দেরি হয়ে যায়। সঠিক সময়ে বীজ বোনা না হলে উৎপাদন ব্যাহত হয়। এই সমস্যার সমাধান হবে বিনা কর্ষণে চাষের মাধ্যমে। এই পদ্ধতিতে চাষ করলে বীজ বোনার জন্য আলাদা ভাবে জমি তৈরি করতে হয় না। জিরো টিলেজ যন্ত্রের মাধ্যমে বীজ বোনা, সার দেওয়ার মতো কাজ করা হয়। এতে চাষের খরচ কম হয়। শ্রমও কম লাগে।
জিরো টিলেজ যন্ত্রটির দাম ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। ট্রাক্টরের সাহায্যে এই যন্ত্র চালাতে হয়। এক্ষেত্রে যেহেতু যন্ত্রের মাধ্যমে বীজ বোনা হয়, তাই বীজ সারিতে বোনা সম্ভব হয়। প্রতি বিঘায় ১০-১২ কেজি বীজ কম লাগে। মাটির সঠিক গভীরে সার দেওয়া যায়। তাই সারেরও অপচয় কম হয়। গাছ মাটিতে হেলে পড়ে না। মাটির স্বাস্থ্য বজায় থাকে। ভূমিক্ষয় কম হয়।
এই পদ্ধতিতে চাষ করতে হলে উচু নীচু জমি আগে সমান করে নিতে হবে। জমির আগাছা আগে থেকেই পরিষ্কার করতে হবে। বিঘা প্রতি ১০-১২ কেজি বীজ তিন-পাঁচ সেন্টিমিটার গভীরতায় বপন করা হয়। এর কয়েকদিন পরে, আগাছা জন্মানোর আগেই আগাছানাশক প্রয়োগ করতে হয়। গম বোনার পর প্রথম ১০-১৫ দিনে জমিতে যাতে জল না জমে, সেদিকে নজর দিতে হয়। মাটি শুকিয়ে গেলে হালকা সেচ দিতে হয়। বীজ বোনার ২১ দিনের মধ্যে প্রথম সেচ ও ৪২-৪৫ দিনের মধ্যে দ্বিতীয় সেচ দিতে হয়। ফুল আসার সময় তৃতীয়বার সেচ দিতে হয়।