কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
জানা গিয়েছে, গঙ্গার তীরে অসংরক্ষিত এলাকায় গড়ে উঠেছে মানিকচক ঘাট। দশকের পর দশক ধরে সেই অসংরক্ষিত এলাকা দিয়েই চলছে পারাপার। যেহেতু গোটা ঘাটটিই অসংরক্ষিত এলাকায় অবস্থিত, তাই সেখানে জেটির কোনও পরিকাঠামোও গড়ে তুলতে পারে না প্রশাসন। তাই ঝুঁকি নিয়েই পারাপার করছে যানবাহী ভেসেল থেকে শুরু করে অন্যান্য জলযান।
এপ্রসঙ্গে মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ঘাটটি গঙ্গার অসংরক্ষিত এলাকায় রয়েছে। সেখানে জেটি তৈরি করলেও প্রতি বর্ষাতেই তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়ে যায়। তাই জেটি বানানো হচ্ছে না। তবে অন্যান্য পরিকাঠামো গড়ে তোলা নিয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই ঘাটে আসার জন্য যে রাস্তা রয়েছে, পূর্ত দপ্তরের পক্ষ থেকে সেটির নিয়মিত তদারকি করা হয়ে থাকে। ঘাটে হাইমাস্ট আলোরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মানিকচক ঘাটে গত সোমবার ঝাড়খণ্ডের রাজমহল থেকে আসা একটি যানবাহী ভেসেল থেকে আটটি মালবোঝাই ট্রাক গঙ্গায় পড়ে যায়। ক্ষতি হয় বেশ কয়েক কোটি টাকার। তলিয়ে যান তিনজন। ইতিমধ্যে দু’জনের মৃতদেহ ও চারটি ট্রাক উদ্ধার করা হয়েছে নদী থেকে। শুক্রবার ও শনিবার নতুন করে কোনও দেহ বা ট্রাক উদ্ধার করা যায়নি বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
এই দুর্ঘটনার পর থেকেই মানিকচক ঘাটের পরিকাঠামোর বেহাল দশা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ঘাটের নিলাম করা হয়। যাঁকে ঘাট দেওয়া হয় তাঁর মূল লক্ষ্য থাকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রত্যাশিত অর্থ তুলে নেওয়া। ঘাটের পরিকাঠামোর সংস্কার নিয়ে কারওরই কোনও মাথাব্যথা নেই। এই ঘাটটিকে সংস্কার করে নিলাম করার সময় দরপত্র বাড়িয়ে দেওয়া হোক। তাতে যাত্রীভাড়া হয়ত কিছুটা বাড়বে, কিন্তু প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী পারাপারের চেয়ে কিছুটা বেশি ভাড়া দিয়ে নিরাপদে যাতায়াত করা বেশি ভালো। মানিকচকের বাসিন্দা সন্তোষ মণ্ডল বলেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নৌকা চলাচল করে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদীপথে। এর আগেও একাধিকবার দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেসবের বলি হয়েছেন অনেক মানুষ। ২০১০ সালেও একই ধরনের দুর্ঘটনায় একটি লরি গঙ্গায় পড়ে গিয়েছিল। ওই ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়া হয়নি। ঘাটের সংস্কারও করা হয়নি।
দুর্ঘটনার পরে মানিকচক ঘাটে এসে বিজেপি জেলা সভাপতি গোবিন্দ মণ্ডল জানান, ঘাটের অবস্থা দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে, ন্যূনতম সংস্কার হয়নি এই গুরুত্বপূর্ণ ঘাটের। শুধু মুনাফা করা হয়েছে এই ঘাট থেকে। ঘাটের সংস্কারের পুরো দায়িত্ব রাজ্য সরকারের বলেও দাবি করেন তিনি। কার্যত একই সুরে মানিকচক ঘাটের বেহাল দশা নিয়ে সরব হয়েছেন স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়ক মোত্তাকিন আলমও। তিনি বলেন, এই ধরনের পরিকাঠামোহীন ঘাটের খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
বিরোধীদের এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে গৌরবাবুর বক্তব্য, সেখানে পরিকাঠামোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শুধু সমালোচনা করলে হবে না। পরিস্থিতি বুঝে কথা বলতে হবে।