কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
এদিন বেলা পৌনে দু’টো নাগাদ মানিকচক ঘাট থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে উদ্ধার করা হয় তারাচাঁদ যাদবের দেহ। ৬০ বছর বয়সী তারাচাঁদ দুর্ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। তাঁকে নদীতে পড়ে যেতে কেউই দেখেননি বলে জানানো হয়েছিল পুলিসকে। স্বাভাবিকভাবেই পুলিস আধিকারিকরা ভেবেছিলেন, এত বড় দুর্ঘটনার মানসিক চাপ নিতে না পেরে তিনি হয়তো এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছেন। কিন্তু এদিন তাঁর দেহ উদ্ধারের পরে বোঝা গেল যে সোমবার সন্ধ্যায় ওই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছিলেন তিনিও।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই তল্লাশি শুরু হয় গঙ্গার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে। পুলিস সুপার অলোক রাজোরিয়ার নির্দেশে শুধু মানিকচক ঘাটই নয়, গঙ্গার ডাউনস্ট্রিমের প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কার্যত চিরুনি তল্লাশি চালানো হয়। এদিনও উদ্ধার ও তল্লাশি অভিযানের নেতৃত্ব দেন মানিকচক থানার অফিসার ইন চার্জ গৌতম চৌধুরী। তিনি বলেন, পুলিস সুপারের নির্দেশ মেনে গঙ্গায় বিস্তৃত এলাকাজুড়ে তল্লাশি চালানোর সুফল মিলেছে। ঘটনাস্থল থেকে অনেকটা দূরে, আরও এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। মৃতদেহ সনাক্ত করেছেন তারাচাঁদ যাদবের ছেলে। তাঁর দেহ মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মানিকচক থানার ওসি আরও বলেন, এদিন বেলা পৌনে চারটা নাগাদ চতুর্থ ট্রাকটি উদ্ধার করা গিয়েছে। বাকি ট্রাকগুলির সন্ধানে তল্লাশি চলছে। আশা করা যায়, গঙ্গায় ডুবে যাওয়া বাকি ট্রাকগুলিও দ্রুত উদ্ধার করা সম্ভব হবে।
এদিকে উদ্ধার কাজ চলার সময় এদিনও মানিকচক ঘাটে ছিল উৎসুক জনতার ভিড়। তবে নদীর কাছাকাছি যেন কৌতূহলী জনতা চলে আসতে না পারেন সেদিকে সতর্ক নজর রেখেছিলেন পুলিস কর্মীরা। ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নিয়ে আসা হাইড্রলিক ক্রেনটিকে এদিনও উদ্ধার কাজে ব্যবহার করা হয়।
এদিকে ডুবে যাওয়া ট্রাকগুলির জন্য বিমা কোম্পানির কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ পাওয়া নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন মালিকরা। অনেকেই ট্রাক কিনেছেন বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে। তখনই বিমা করাতে হয়েছিল। আর্থিক ঋণদাতা সংস্থার এক এজেন্ট বলেন, বিমার টাকা পেতে মূলত দুই ধরণের সমস্যা রয়েছে। প্রথমত, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলি ট্রাকগুলির সঙ্গেই নদীতে তলিয়ে গিয়েছে। তার চেয়েও বড় সমস্যা হল ট্রাকের ক্ষেত্রে মেরিন ইনস্যুরেন্স থাকে না। সড়কপথে দুর্ঘটনা ঘটলে বিমার কভারেজ থাকে। কিন্তু যেহেতু ট্রাকগুলিকে নদীপথে নিয়ে আসা হচ্ছিল তাই বিমার টাকা আদৌ পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে আমরা নিশ্চিত নই। তেমন হলে চরম আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়বেন ওই ট্রাকগুলির মালিকরা। উল্লেখ্য, গত সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ মানিকচক ঘাটে এসে নোঙর করার পরেই একটি ভেসেল থেকে আটটি মালবোঝাই ট্রাক গঙ্গায় পড়ে যায়। নিখোঁজ হয়ে যান তিনজন। দু’জনের দেহ উদ্ধার হলেও তৃতীয়জনের খোঁজ এখনও মেলেনি। নিজস্ব চিত্র