পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
মানিকচক থানার অফিসার ইন চার্জ গৌতম চৌধুরী বলেন, এদিন যাঁর দেহ উদ্ধার করা গিয়েছে, তাঁর নাম সাইদুল হক ওরফে ময়না। আরও একজন জলে ডুবে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছিলেন বাসিন্দারা। মন্টু শেখ নামে সেই ব্যক্তির খোঁজ চলছে। এছাড়া তারাচাঁদ যাদব নামে আরও একজন এখনও নিখোঁজ। এদিন সকালে মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা থেকে একটি হাইড্রলিক ক্রেন নিয়ে আসা হয়। সকালে একটি ও বিকেলে একটি ট্রাক উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বাকি ট্রাকগুলিও উদ্ধারের কাজ চলছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত সাইদুল ওরফে ময়নার বয়স আনুমানিক ২০ বছর। মৃত ওই তরুণ ডুবে যাওয়া পণ্যবাহী ট্রাকগুলির একটিতে সহায়কের কাজ করতেন। দুর্ঘটনার সময় ট্রাকগুলির সঙ্গে তিনিও পড়ে গিয়েছিলেন নদীতে। স্রোতের বিরুদ্ধে লড়াই করেও নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি। সলিলসমাধি ঘটে তাঁর।
মৃত তরুণের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জ জেলার রাধানগর থানার উদুয়া এলাকার তালবান্না গ্রামে। এদিন মৃত তরুণের দেহ উদ্ধার হওয়ার পরে তাঁকে শনাক্ত করেন পরিবারের লোকেরা। কান্নায় ভেঙে পড়েন সাইদুলের বাবা মাসরুল শেখ। তিনি বলেন, কখনও ভাবতেও পারিনি যে ছেলেকে এভাবে হারাতে হবে। একসময় ট্রাকের চালক হওয়ার ইচ্ছা ছিল তাঁর। স্বপ্ন ছিল টাকা জমিয়ে নিজের একটি ট্রাক কেনার। কিন্তু সেই ট্রাকের সঙ্গেই গঙ্গায় পড়ে মৃত্যু হল তাঁর। এদিন ময়নাতদন্ত সেরে পরে বিকেলের দিকে পরিবারের হাতে সাইদুলের দেহ তুলে দেওয়া হয়।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালের দিকে একটি ট্রাক জল থেকে তোলা হয়। সন্ধ্যার দিকে আরও একটি ট্রাককে জলের নীচে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। পরে রাতের দিকে সেই ট্রাকটিও উদ্ধার করা হয়।
এদিন সকালেও মানিকচক ঘাটে ছিল উৎসুক জনতার ভিড়। উদ্ধারকাজ দেখতেই কৌতুহলী জনতা ভিড় জমিয়েছিল। ভিড় সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় পুলিসকে। কখনও কখনও বাঁশের ব্যারিকেড টপকে ঘাটের কাছাকাছি জনতার একাংশ চলে আসে। সেসব ক্ষেত্রে ছুটে গিয়ে লাঠি উঁচিয়ে তাদের সরিয়ে দেন পুলিস কর্মীরা।
এদিনও মানিকচক ঘাট পরিদর্শন করেন বিজেপি নেত্রী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার এনডিআরএফ দিয়ে সাহায্য করেছে উদ্ধারকাজে। তবুও ঘাটের বেহাল পরিস্থিতির কথা স্বীকার না করে রাজ্যের শাসকদল ক্রমাগত কেন্দ্রকে দোষারোপ করে যাচ্ছে। রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা ক্রমশ প্রকট হচ্ছে।
পাল্টা তোপ দেগেছে তৃণমূলও। জেলা তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র শুভময় বসু বলেন, এখানে একটি বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। এখন উদ্ধার প্রক্রিয়া চলছে। এই পরিস্থিতির মধ্যে বিজেপির এই ক্ষুদ্র রাজনীতি অত্যন্ত নিন্দনীয়।
এদিকে মানিকচক এসে ঘুরে গিয়েছেন ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জ জেলা ট্রাক মালিক অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারাও। তাঁরা বলেন, সোমবারের ওই দুর্ঘটনায় ট্রাকগুলির দাম ও পণ্যের দাম মিলিয়ে প্রায় পৌনে তিন কোটি টাকার সামগ্রী তলিয়ে গিয়েছে গঙ্গায়। এদিন পর্যন্ত যে ট্রাকগুলি উদ্ধার করা হয়েছে, সেগুলির খুবই খারাপ অবস্থা। বোঝা গিয়েছে, উদ্ধার করলেও আর কোনওভাবেই সেই ট্রাকগুলি ব্যবহার করা যাবে না। সেইসঙ্গে ট্রাকগুলিতে থাকা বালি, পাথরগুলিরও মূল্য তো আছেই।