কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
রাজ্যের শেষ সীমান্ত ব্লক কুমারগ্রামে দেড় বছরে তৃণমূলের এই গোষ্ঠীকোন্দল কীভাবে মিটল তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিভিন্ন মত উঠে আসছে। কুমারগ্রাম বিধানসভায় ভূমিপুত্র রাজবংশী ভোট আছে ৪৫-৪৮ শতাংশ। আদিবাসী ভোট আছে ৩০ শতাংশ। বাকিটা অনান্য সম্প্রদায়ের। বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও কুমারগ্রামে শাসক দলের বিভিন্ন কমিটিতে ভূমিপুত্র রাজবংশীরা দীর্ঘদিন ব্রাত্য ছিল। যার ফলে কুমারগ্রামে রাজবংশী যুব সম্প্রদায় তৃণমূল বিমুখ হয়ে পড়ে। ফলে এক সময় শাসক দলে গোষ্ঠীকোন্দল, নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ ও দলীয় পার্টি অফিস ভাঙচুর ছিল নিত্য নৈমত্তিক ঘটনা। সেজন্য ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে কুমারগ্রামে তৃণমূল প্রার্থী জেমস কুজুর জেতার পরেও ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে আন্তঃরাজ্য সীমান্তে থাকা ওই বিধানসভা এলাকায় ২৪ হাজার ভোটের লিড পায় গেরুয়া শিবির। দেরিতে হলেও এটা বুঝতে পেরে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব গত বছরের আগস্টে কুমারগ্রামে দলের ব্লক সভাপতি পদে নিয়ে আসে রাজবংশী মুখ ধীরেশ চন্দ্র রায়কে।
এদিকে একসময় কেএলও’র আঁতুরঘর ছিল কুমারগ্রাম। প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও বাম জমানায় প্রাক্তন কেএলও সদস্যদের আর্থিক পুনর্বাসন হয়নি। এর ফলে ক্ষুব্ধ ছিল রাজবংশী সম্প্রদায়ের কেএলও সদস্য ও তাঁদের পরিবাররা। এই ঘটনাও বুঝতে দেরি হয়নি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এরপরেই তৃণমূল সরকারের উদ্যোগে গত বছর কুমারগ্রামে অনেক প্রাক্তন কেএলও সদস্যরা আর্থিক পুনর্বাসন হিসেবে হোমগার্ডে চাকরি পেয়েছেন। এবার হোমগার্ডে চাকরি পাওয়ার অপেক্ষায় প্রাক্তন কেএলও লিঙ্কম্যানরাও।
দেখা যাচ্ছে দলের ব্লক সভাপতি পদে ভূমিপুত্র রাজবংশী মুখ আসতেই কুমারগ্রামে শাসক দলের গোষ্ঠীকোন্দল একেবারে উধাও। গত দেড় বছরে কুমারগ্রামে জোড়াফুল শিবিরে একটাও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনার নজির নেই। বিরোধীরাও কার্যত এটা মেনে নিয়েছে। পদ্মফুল ছেড়ে কুমারগ্রামে ফের ঘাসফুলের চাষ করতে নেমে পড়েছে ভূমিপুত্র রাজবংশী যুব সমাজ।
জেলার কয়েকটি ব্লকে এখনও তৃণমূলের পূর্ণাঙ্গ ব্লক কমিটি তৈরিই হয়নি। সেখানে ব্লক সভাপতি ধীরেশবাবুর নেতৃত্বে কুমারগ্রামে ইতিমধ্যেই তৃণমূলের ৩৪ জনের পূর্ণাঙ্গ ব্লক কমিটি তৈরি করে ফেলা হয়েছে। এমনকী, ব্লকে ১৩টি অঞ্চলের অঞ্চল কমিটিও গঠনের কাজও শেষ করে ফেলা হয়েছে। ব্লক ও অঞ্চল কমিটিগুলি তৈরির পর এখন দলের অঞ্চলভিত্তিক কর্মিসভা চলছে। শুধু তাই নয়, লোকসভা ভোটে বিজেপিতে চলে যাওয়া ভোটব্যাঙ্কের অনেকটা দলে ফিরিয়ে এনেছে তৃণমূল। ১৩টি অঞ্চলে এক বছরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ৫০০০ পরিবারকে দলে টেনে এনেছে।
দলের ব্লক সভাপতি ধীরেশ চন্দ্র রায় বলেন, কুমারগ্রামে গত দেড় বছরে দলের মধ্যে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছায়া পড়তে দেওয়া হয়নি। আমরা তেড়েফুঁড়ে বিধানসভা ভোটের প্রচারে নেমেছি। দলের জেলা সহ সভাপতি প্রেমানন্দ দাস বলেন, আমরা কুমারগ্রামে দল অনেকটাই গুছিয়ে নিয়েছি। একুশের ভোটে কুমারগ্রামে আমরাই ফের জিতছি। যদিও বিজেপি’র জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, অন্য দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। লোকসভা ভোটের মতো বিধানসভা ভোটেও কুমারগ্রামে সাফল্য পাবে আমাদের দল।