কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
বালুরঘাট ও কুশমন্ডি রেঞ্জের বনদপ্তরের আধিকারিক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শিয়ালের অত্যাচারের খবর শুনেছি। আমাদের তরফ থেকে গ্রামে গ্রামে বনকর্মীরা জাল নিয়ে ঘুরছেন। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও শিয়ালকে ধরা যায়নি। বলা হচ্ছে, শিয়ালের কামড়ে যাঁরা জখম হয়েছেন, তারা বনদপ্তরের কাছে আবেদন করলে ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেওয়া হবে। বোয়ালদার গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান পিন্টু বসাক বলেন, ইদানীং শিয়ালের অত্যাচারে এলাকার মানুষ আতঙ্কিত। গ্রামের বহু মানুষকে শিয়াল কামড় দিয়ে জখম করেছে। এবিষয়ে আমরা বনদপ্তরে জানিয়েছি। এছাড়াও গ্রামবাসীকে সতর্ক করা হচ্ছে, যাতে সকলে সাবধানে থাকেন।
দুর্লভপুর গ্রামের বাসিন্দা শিউলি সরকারের মেয়েকে সম্প্রতি কামড়ে দিয়েছে শিয়াল। সেই ঘটনাটি ঘটেছে একেবারে দিনেদুপুরে। শিউলি বলেন, সকাল বেলা আমার ১১ বছরের মেয়ে বাড়ির সামনে খেলছিল। সেই সময় না জানি কোথা থেকে এসে শিয়ালটি আমার মেয়েকে আক্রমণ করে। মেয়ে নিজেকে বাঁচাতে চিৎকার করতে থাকে। সেইসঙ্গে শিয়ালটিকে হাত-পা দিয়ে মারতে থাকে। মেয়ের চিৎকার শুনে আমরা বাইরে লাঠি নিয়ে আসতেই শিয়াল পালিয়ে যায়। ততক্ষণে মেয়ের পায়ে কামড়ে দিয়ে জখম করে দিয়েছে শিয়াল। দিনের বেলাতেও এভাবে শিয়াল হামলা চালালে রাতে যে কি হতে পারে, ভাবতেই ভয় লাগছে।
আরেক বাসিন্দা কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, গত সপ্তাহে একই দিনে বিভিন্ন জায়গায় সাতজনকে শিয়াল কামড় দিয়েছে। তাঁদের মধ্যে একটি বাচ্চাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। সন্ধ্যা হলেই আর কেউ বাড়ি থেকে বের হতে চাইছেন না। বেরতে বাধ্য হলে দল বেঁধে, হাতে লাঠি নিয়ে বেরচ্ছি।
গ্রামবাসীরা জানান, দল বেঁধে থাকলে শিয়ালগুলি সামনে আসছে না। কিন্তু একা কাউকে পেলেই তার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ছে। গত একমাস যাবৎ এই উৎপাত চলছে। গত সপ্তাহে দুর্লভপুর গ্রামে তাণ্ডব চালায় শিয়াল। দিনের বেলায় বাড়ির সামনে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী দিশা সরকারকে কামড়ে দেয় শিয়াল। পরে আরও দুটি বাচ্চাকে শিয়াল কামড় দিয়ে জখম করেছে। এছাড়াও দু’জন মহিলা, একজন বৃদ্ধ ও দু’জন যুবক সহ আরও অনেকে শিয়ালের আক্রমণের শিকার হয়েছেন ইতিমধ্যেই।
বোয়ালদার গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যেই দোগাছি ফরেস্ট নামে একটি বড় বনাঞ্চল রয়েছে। এছাড়াও ওই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ছোট ছোট তিনটি বনাঞ্চল রয়েছে। সারাবছরই সেখানে কমবেশি শিয়াল দেখা যায়। তার মধ্যে শীতকালে শিয়ালের আনাগোনা বেশি হয়। কিন্তু এভাবে শিয়ালের আক্রমণ করার মতো ঘটনা বা তাদের বারবার লোকালয়ে চলে আসার মতো ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি বলে গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
বনদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, সম্ভবত জঙ্গলে খাদ্যের অভাব দেখা দেওয়ায় শিয়ালগুলি লোকালয়ে চলে আসছে। প্রতীকী চিত্র