কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
সোমবার সকালে ওই শিক্ষককে তাঁর ঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। বাড়ির লোকেরাই প্রথম তাঁকে ওই অবস্থায় দেখতে পান। পরে তাঁকে তড়িঘড়ি কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এদিনই তাঁর দেহ রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে ময়নাতদন্ত করার পরে পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেওয়া হয়েছে। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিস ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
এবিষয়ে রায়গঞ্জ পুলিস জেলার এসপি সুমিত কুমার বলেন, ওই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। ওই শিক্ষকের পিসতুতো দাদা অনুপ দাশগুপ্ত বলেন, আমার ভাই প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা করত। কিন্তু বেশ কিছু বছর ধরে সে ক্রিকেট সহ বিভিন্ন ধরনের জুয়ার নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছিল। সেজন্য বাজারে তাঁর অনেক দেনাও হয়ে যায়। পরিচিত-অর্ধপরিচিত অনেক মানুষের থেকে অনেক টাকা ধার দেনা করেছিল সে। জুয়ায় হেরে যাওয়া টাকা শোধ করারও চেষ্টা করত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওত টাকা আর শোধ করা সম্ভব হয়নি। পাওনাদাররা তার উপর টাকা ফেরতের জন্য চাপ দিচ্ছিল। সেই চাপ সে আর নিতে পারেনি। মানসিক অশান্তি থেকেই সম্ভবত গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে ভাই।
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, হেমতাবাদ ব্লকের বাঙালবাড়ি আটঘরা ফ্রি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক ছিলেন সুদীপবাবু। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী এবং ছেলেমেয়ে রয়েছে। গত দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর ধরে নানা ধরনের জুয়ার নেশায় জড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি। মূলত আইপিএলের সময় অনেক টাকা ধারদেনা করে জুয়া খেলতেন বলে পরিবারের সদস্যরা দাবি করছেন। জেতার থেকে তাতে হারার ঘটনাই বেশি ঘটত। সেই টাকা শোধ করতে করতে আর সামলে উঠতে পারছিলেন না। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগেও একবার এমনই সাঙ্ঘাতিক ঋণের জালে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। প্রায় ছয়-সাত বছর আগের কথা। সেবার ঋণের টাকা শোধ করতে কলকাতায় চলে যান। কীভাবে ওই টাকা শোধ করা যায়, তা নিয়ে নানা পথ খুঁজতে থাকেন।
অভিযোগ, আগেও একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন ওই ব্যক্তি। মাস ছয়েক আগে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু সেবার পরিবারের সদস্যরা সময়মতো টের পেয়ে যান। দ্রুত তাঁকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। সেবার কোনওরকমে বেঁচে যান তিনি।
জানা গিয়েছে, গত রবিবার রাতে পরিবারের কারও সঙ্গে খুব বেশি কথা বলেননি ওই ব্যক্তি। খাওয়া-দাওয়া সেরে নিজের ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন সকালে অনেক ডাকাডাকির পরও তাঁর সাড়া মিলছিল না। তাতেই বাড়ির লোকজনের সন্দেহ হয়। দরজা ভেঙে তাঁরা ঘরে ঢোকার পর ওই দৃশ্য দেখেন।