বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
কিছুদিন ধরে কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক মিহিরবাবুকে নিয়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়েছে দলীয় নেতৃত্ব। দলের সমস্ত সাংগঠনিক পদ ছেড়ে দেওয়ার কথা জানানোর পরও মুখ বন্ধ করেননি তিনি। সম্প্রতি ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের টিমকে কার্যত ঠিকাদার সংস্থা বলে তৃণমূল নেতৃত্বের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কোচবিহারে নিজের বাড়িতে বিজেপি নেতা নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গে তাঁর ছবি ভাইরাল হতেই তৃণমূলের অভ্যন্তরে জোর গুঞ্জন শুরু হয়। সেই সাক্ষাৎ নিতান্তই সৌজন্যমূলক বলে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হলেও জেলায় তৃণমূলের অভ্যন্তরে মিহিরবাবুর ওই আচরণে অনেকেই ক্ষুব্ধ হন। হয়তো তাঁর গতিবিধি জানতেই জেলার দুই শীর্ষনেতা রবিবাবু এবং বিনয়বাবু সকালে মিহিরবাবুর বাড়িতে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে যান। কিন্তু তাঁরা ভাবতে পারেননি মিহিরবাবু থাকবেন না। বাড়িতে গিয়ে জানতে পারেন তিনি আলিপুরদুয়ারে দিদির বাড়িতে গিয়েছেন। সেখানেও যান তাঁরা। তবে লাভ হয়নি। তাঁদের জানানো হয়, অসমে অন্য এক দিদির বাড়িতে গিয়েছেন তিনি। অগত্যা ফিরে যান তাঁরা। শুক্রবার এই ঘটনায় কোচবিহারের রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়ায়। মিহিরবাবুর এই লুকোচুরির পিছনে দলবদলের ইঙ্গিতও দেখছেন দলেরই কেউ কেউ।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এদিন বলেন, আমরা মিহিরবাবুর বাড়ি বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে জানতে পারি তিনি আলিপুরদুয়ারে অমর টকিজ সংলগ্ন এলাকায় তাঁর বোনের বাড়ি গিয়েছেন। এরপর আমরা আলিপুরদুয়ারে যাই। সেখান থেকে আমাদের জানানো হয়েছে তিনি দিদির সঙ্গে দেখা করতে অসমে চলে গিয়েছেন। ফলে তাঁর সঙ্গে এদিন দেখা হয়নি। তাঁকে ফোনেও পাইনি। অনগ্রসর শ্রেণীকল্যাণ মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, আমি ও রবিদা দু’জনে সব সময়ে এক জায়গায় হতে পারি না। এদিন হয়েছিলাম। তাই দু’জনেই মিহিরবাবুর সঙ্গে দেখা করতে আলিপুরদুয়ার পর্যন্ত গিয়েছিলাম। কিন্তু তাঁর দেখা পাইনি। পাশাপাশি তিনি এও বলেন, নিশীথ প্রামাণিক একটা রাজনৈতিক স্বার্থ নিয়ে এসেছিলেন। আমাদের তো আর সেটা নেই! আমরা প্রতি বছরই বিজয়ার পর যাই। নিশীথবাবু তো আর প্রতি বছর আসেন না। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, এর আগে মিহিরবাবুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে আমিও তাঁর দেখা পাইনি। আবার পরে তাঁর সঙ্গে দেখা হয়েছে। হয়তো তিনি বাড়িতে ছিলেন না। তিনি আমাদের সঙ্গেই আছেন। মিহিরবাবুর সঙ্গে কথা বলে গিয়েছিলেন কি না, তা তাঁরাই বলতে পারবেন। এদিকে, বিজেপির জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, মিহিরবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। এমনিতেই নিশীথ-মিহিরের সৌজন্য-সাক্ষাৎ ঘিরে জল্পনার পারদ চড়ছে। তার উপর এদিন দলের দুই বিধায়ক তথা দুই মন্ত্রী একসঙ্গে মিহিরবাবুর বাড়ি গিয়েও তাঁর দেখা না পাওয়ায় জল্পনা আরও বেড়েছে। যদিও এবিষয়ে মিহিরবাবুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর ফোন সুইচড অফ ছিল।