সংবাদদাতা, নকশালবাড়ি: শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়ায় চিতাবাঘের হামলায় এক মহিলা জখম হয়েছেন। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটে ফাঁসিদেওয়া ব্লকের বন্দরগছে। বনবিভাগ জানিয়েছে, আহত মহিলার নাম স্বপ্না কানু। তিনি ওই গ্রামেরই বাসিন্দা। রাতে জখম ওই মহিলাকে গ্রামবাসীরা উদ্ধার করে ফাঁসিদেওয়া গ্রামীণ হাসপাতাল নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। এদিকে চিতাবাঘ হামলার ঘটনা গোটা গ্রামে বিদ্যুতের গতিতে ছড়িয়ে পড়ে। ফাঁসিদেওয়া থানার একেবারে কাছে এ ঘটনায় রাতভর এলাকায় আতঙ্ক থাকে। গ্রামে বাঘ আসার খবর পেয়ে রাতেই ফাঁসিদেওয়া থানার পুলিস ও ঘোষপুকুর রেঞ্জের বনকর্মীরা ওই এলাকায় তল্লাশি অভিযান শুরু করেন। তাঁরা বাজি, পটকা ফাটান। কিন্তু গভীররাত পর্যন্ত তাঁরা চিতাবাঘের কোনও হদিশ পাননি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বনকর্মীরা এলাকার ঝোপঝাড়, চা বাগানে চিতাবাঘের খোঁজ শুরু করেন। কিন্তু এদিনও চিতাবাঘ মেলেনি। স্থানীয় ও বনবিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ফাঁসিদেওয়া ব্লকের বন্দরগছে বুধবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ হঠাৎ করে একটি চিতাবাঘ চলে আসে। ওই এলাকাটি ব্লকের জনবহুল এলাকাগুলির মধ্যে অন্যতম। কয়েক হাজার মানুষ বাসবাস করে। রাতে এলাকায় চিতাবাঘ ঘোরাঘুরি করতে দেখতে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ছোটাছুটি শুরু হয়ে যায়। ঠিক ওই সময় একটি বাড়ির বেড়া টপকে উঠোনে চলে আসে চিতাবাঘটি। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা স্বপ্না কানুকে জখম করে। ওই মহিলা বাঘ বাঘ বলে চিৎকার করতেই বাড়ির অন্যান্য লোকজন বেরিয়ে আসেন। তাঁরা সামনে আসতেই চিতাবাঘটি লাফ মেরে ফের বেড়া টপকে অন্ধকারে গা ঢাকা দেয়। জখম মহিলা বলেন, বাইরে বাঘ বেরিয়েছে হইহল্লা শুনে বের হই। আচমকা বাঘটি আমার উপর হামলে পড়ে। বাঘের নখের আঁচড়ে কয়েক জায়গায় কেটে গিয়েছে। বাড়ির লোকজন জোড়ো না হলে হয়তো চিতাবাঘটি আমাকে তুলেই নিয়ে যেত। এর আগে এলাকায় এমন ঘটনা কখনও হয়নি। ঘোষপুকুরের রেঞ্জার সোনম ভুটিয়া বলেন, ওই এলাকায় একটি চিতাবাঘ রাতে ঢুকেছিল। বাঘটির হামলায় এক মহিলা আহত হন। মহিলার গলায় জখমের চিহ্ন মিলেছে। তাঁকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর রাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বাজি, পটকা ফাটিয়ে চিতাবাঘটিকে তাড়িয়ে দিয়েছি। আসলে ওই এলাকার বাড়িঘরের চারপাশে ঝোপঝাড় রয়েছে। পাশাপাশি চা বাগান আছে। আমরা বাসিন্দাদের বলেছি, ঝোপঝাড় পরিষ্কার করে নিতে। এদিন সকালে ফের সেখানে আমরা যাই। কিন্তু চিতাবাঘের খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে রাতে বনকর্মীদের একটি দল ওই এলাকায় এক-দু’দিন টহল দেবে। সাধারণত ওই এলাকায় চিতাবাঘ আসার কথা নয়। কেন এল খতিয়ে দেখছি। বিষয়টি উপর মহলে জানিয়েছি। উপর মহল থেকে নির্দেশ এলেই ওই এলাকায় খাঁচা পাতা হবে। প্রসঙ্গত, ওই এলাকায় কিছুটা দূরেই রয়েছে মহম্মদ বক্স ফরেস্ট। যদিও বন বিভাগের দাবি, ওই জঙ্গলে চিতাবাঘ থাকে না।  প্রতীকী চিত্র