কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
তবে মেলা না হলেও অষ্টমীর দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে এবারও এলাকায় ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা রয়েছে। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এবছর এই পুজোর ১৩৩তম বর্ষ। ১ নভেম্বর, রবিবার এই পুজো হবে। অতীতে এই এলাকার বাসিন্দাদের আমোদ প্রমোদের কোনও ব্যবস্থা বা সুযোগ ছিল না। ওই এলাকায় সেভাবে কোনও পুজোও হতো না। সেসময় স্থানীয় এক বাসিন্দা জহরা পাল ওই পুজো ও মেলার সূচনা করেছিলেন। তাঁর নাম থেকেই ওই মেলার নাম হয়েছে জহরা মেলা।
পুজোর নাম অষ্টমীর পুজো কেন? উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুজো শেষ হয়ে যাওয়ার পরে এখানে পুজো শুরু হয়। নিয়ম রয়েছে, দশমীর আট দিন পরে হবে পুজো। সেই আট দিন থেকেই নাম হয়েছে অষ্টমীর দুর্গা। এখানে দেবী দুর্গার সঙ্গে শিব, নারায়ণ, গঙ্গা,কামদেব সহ মোট ২৮ জন দেবদেবীর পুজো হয়। দেবীর মন্দিরেই এই ২৮ জন দেবদেবীর মূর্তি আছে। এমনিতে দুর্গাপুজো হয় ষষ্ঠী থেকে দশমী অবধি। কিন্তু অষ্টমীর দুর্গাপুজো হয় একদিনেই। তবে পুজো শেষ হয়ে গেলেও তারপরের কয়েকদিন ধরে চলে মেলা। আনন্দে মাতেন এলাকার বাসিন্দারা। যদিও এবার সেসব কিছুই হচ্ছে না।
পুজো কমিটির সম্পাদক অজয় পাল বলেন, আমাদের এই পুজো শতাব্দী প্রাচীন। করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য বিধি মেনেই পুজা করা হবে। মাস্ক ও স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা থাকবে। এবছর মেলা বসবে না। প্রতি বছর যে সমস্ত দোকানি বাইরে থেকে আসতেন, তাঁদের সেকথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতি বছরের মতই এবছরও অত্যন্ত নিয়ম নিষ্ঠা সহকারে দেবীর পুজো হবে।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা তৃণমূল কংগ্রেসের চোপড়া ব্লক সভাপতি প্রীতিরঞ্জন ঘোষ বলেন, করোনার জেরে মেলা হচ্ছে না। তবে স্থানীয় কিছু দোকানদার শারীরিক দূরত্ব মেনে দোকান করতে পারবেন। সকলের বিশ্বাস, এখানে দেবী খুব জাগ্রত। তাই বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ পুজো দিতে আসেন। তবে জমায়েত যাতে না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
স্থানীয়রা বলছেন, প্রতি বছর পুজোকে কেন্দ্র করে এখানে তিনদিন ধরে মেলা চলত। দূর দূর থেকে দোকানদাররা পসরা নিয়ে আসতেন। নাগরদোলনা, ব্রেক ডান্স থেকে শুরু করে বিভিন্ন দোকান থাকত। মেলাতে জেলার হস্তশিল্পীরাও তাঁদের পসরা সাজিয়ে বসতেন। মাটির তৈরি হাড়ি, হাতে তৈরি মাদুর, মাটির পুতুল, মাটির চাকা যুক্ত টমটম গাড়ির মতো সামগ্রী বিক্রির ঐতিহ্য ছিল । পুজো দিতে এসে কিংবা দেবী দর্শনে এসে এসে মাটির হাড়ি কিনে তাতে জিলিপি ভর্তি করে বাড়ি ফেরার রেওয়াজও ছিল।
স্থানীয়দের বিশ্বাস, এখানকার দেবী জাগ্রত। তাই বহু দূর থেকে ভক্তরা এখানে আসেন। অনেকেই মানত করেন। মনের ইচ্ছা পূরণ হলে পরের বছর দেবীকে ভোগ দেন তাঁরা। কেউ কেউ দেবীর জন্য সোনার অলঙ্কারও তৈরি করে দেন।