বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
পুজোর দিনগুলিতেও শহরের সানি পার্ক, এয়ারভিউ কমপ্লেক্স, নজরুল বাগ সহ বিভিন্ন এলাকায় দিনভর রাশি রাশি আবর্জনা স্তুপাকার হয়ে ছিল বলে বাসিন্দারা জানিয়েছেন। তাঁদের আরও অভিযোগ, এমনিতেও শহরের প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই রাস্তার পাশে জঞ্জাল জমে থাকছে। কুকুরের বিষ্ঠা থেকে শুরু করে তরিতরকারির খোসা, সব কিছুই রাস্তার উপর ছড়িয়ে থাকছে। শহরবাসী সাফাই নিয়ে সমস্যায় জেরবার হলেও পুরকর্তাদের টনক নড়ছে না বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। জঞ্জালের পাশাপাশি শহরের কিছু এলাকায় জলও জমে থাকায় বাসিন্দাদের নাভিশ্বাস উঠছে। জমে থাকা জল ও জঞ্জাল থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকায় দূষণ ছড়াচ্ছে।
যে কোনও শহরেই জঞ্জাল সাফাই পুরসভার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। সকালের মধ্যে গৃহস্থালীর আগের দিনের সমস্ত জঞ্জাল নির্দিষ্ট জায়গায় বাসিন্দারা ফেলে রাখেন। নির্দিষ্ট সময়ে পুরসভার সাফাইকর্মীরা তা পরিষ্কার করে নিয়ে যান। ওয়ার্ডের মধ্যে কোনও ঘেরা জায়গায় তা রাখা হয়। পরে জঞ্জালবহনকারী গাড়ি সেখান থেকে যাবতীয় আবর্জনা তুলে নিয়ে গিয়ে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ফেলে। ইংলিশবাজার পুরসভার সাফাইকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়েও জঞ্জাল সংগ্রহ করে থাকেন। সেই জঞ্জাল ভ্যাটে ফেলা হয়। কিন্তু বর্তমানে ইংলিশবাজার পুরসভা এলাকায় জঞ্জাল সাফাইয়ের কাজ নিয়মিত হচ্ছে না বলে অভিযোগ। ফলে শহরের মীরচক, বিবিগ্রাম, বাঙ্গালটুলি লেন, বিনয় সরকার রোড, মকদমপুর সহ সর্বত্র আবর্জনা দীর্ঘক্ষণ পড়ে থাকছে। কোনও কোনও জায়গায় ভ্যাট উপচে আবর্জনা রাস্তার উপর চলে আসছে। আবর্জনা থেকে ছড়ানো গন্ধে শহরবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন।
সমস্যা বাড়াচ্ছে জমা জলও। শহরের মালঞ্চপল্লী এলাকার বাসিন্দা ঝরনা নন্দী বলেন, আমরা সাত মাস ধরে জলবন্দি অবস্থায় রয়েছি। জল বের করার কোনও উদ্যোগ পুরসভা নেয়নি। জল ডিঙিয়ে যাতায়াত করা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। আমাদের পুজোর আনন্দ মাটি হয়ে গিয়েছে। সাপ, বিষাক্ত পোকামাকড়ের উপদ্রবে বাড়িতে থাকা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। চোখের সামনে জলাশয় ভরাট হয়ে যাচ্ছে। সেই ভরাট জায়গা বিক্রি করছে জমি মাফিয়ারা। ফলে নিকাশি ব্যবস্থা দিনদিন বেহাল হয়ে পড়ছে। আগামী দিনে সমস্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর প্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, আমাদের সাফাইকর্মীরা প্রতিদিন সকাল সাড়ে নয়টার মধ্যে ওয়ার্ড থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন। তারপরেই অনেক বাসিন্দা ময়লা ফেলছেন। ফলে সেগুলি জমে থাকছে। এছাড়া যেসব এলাকায় জল জমে রয়েছে, সেখান থেকে জল বের করার চেষ্টা চলছে।
পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর তথা প্রাক্তন বিজেপি কাউন্সিলর সঞ্জয়কুমার শর্মা বলেন, আমার ওয়ার্ডে প্রতিদিন যা জঞ্জাল জমা হয় তা বহন করতে তিনবার একটি ট্রাক্টরকে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু পুরসভা আমার ওয়ার্ডে দু’দিন অন্তর একটি ট্রাক্টর পাঠায়। ফলে দিনদিন ওয়ার্ডে জঞ্জালের পাহাড় জমছে।
বর্ষায় আমাদের ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়। ওয়ার্ড থেকে জল নেমে যাওয়ার পর সাফাইকর্মীরা কাদা তুলে এক জায়গায় ডাঁই করে রেখেছেন। কিন্তু পুরসভা ওই কাদা সরাচ্ছে না। ফলে এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ডেঙ্গু সহ মশাবাহিত রোগের আশঙ্কায় আমরা দিন কাটাচ্ছি।