সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক, কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
রাধিকাপুরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থিত উদগ্রামের দুর্গাপুজো প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো। বাংলাদেশের দিনাজপুরের রাজ পরিবারের হাতে শুরু হয়েছিল এই পুজো। বর্তমানে দেবোত্তর সম্পত্তি থেকে পাওয়া টাকা ও ভক্তদের অনুদান দিয়ে পুজোর আয়োজন সম্পন্ন করা হয়। একসময় দিনাজপুরের রাজবাড়ি থেকে কামানের গোলার শব্দ রাধিকাপুরে পৌঁছতেই উদগ্রামে শুরু হয়ে যেত দেবীর বোধন। এমনটাই রীতি ছিল বলে জানিয়েছেন উদগামের অধিবাসীরা। আজ নেই কোনও রাজা বা রাজপাট। কামানের গোলার শব্দ আজ আর ভেসে আসে না। তবে নিয়ম-নিষ্ঠাভরে আয়োজন করা হয় পুজোর। এই ঠাকুর অত্যন্ত জাগ্রত বলে মনে করেন স্থানীয়রা। মা দুর্গার কাছে মানত করতে এই মন্দিরে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ প্রতিবছর ছুটে আসেন।
স্থানীয় বাসিন্দা উমানাথ বর্মন বলেন, যুগ যুগ ধরে আমরা এই পুজো একইভাবে নিয়ম মেনে করে আসছি। কখনওই পুজো বন্ধ হয়নি। শুনেছি, একসময় বাংলাদেশের রাজবাড়ি থেকে কামান দাগার পর এখানে পুজো শুরু হতো। তবে এখন আর সেই দিন নেই। করোনা পরিস্থিতিতেও আমরা এবার পুজো করব। মায়ের কাছে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে মুক্ত হওয়ার কামনা করব।
এই পুজোর ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে। ষষ্ঠী থেকে পাঁচদিন ধরে চলে মঙ্গলচণ্ডীর গান। অষ্টমীতে এখানে বলির প্রচলন রয়েছে। পুজো উপলক্ষে ওই গ্রামের বাসিন্দারা নিরামিষ ভোজন করেন। এই মন্দিরের দেবী প্রতিমার বিসর্জন হয় না দশমীতে। এই মন্দির এবং দেবী এতটাই জাগ্রত যে কাঁটাতারে এপার-ওপার, দুই বাংলার মানুষই পুজোর কয়েকদিন এখানে জড়ো হন। যাঁদের পক্ষে সরাসরি মন্দিরে যাওয়া সম্ভব নয়, তাঁরা দূর থেকেই প্রণাম করেন। যে ক’জন ‘ভাগ্যবান’ পাসপোর্ট-ভিসা বানিয়ে পুজোর সময় ভারতে আসতে পারেন, তাঁরা সরাসরি মন্দিরের পুজোয় যোগদান করেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা এই গ্রামের দেবীকে নিজেদের অভিভাবক মনে করেন। এলাকার যে কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানের আগে নিমন্ত্রণপত্র দেওয়া হয় উদগ্রামের এই মন্দিরে। এবার করোনা আবহের মধ্যেও এই পুজো নিয়ে উৎসাহী স্থানীয় বাসিন্দারা।