সংবাদদাতা, গাজোল: কবে আসবে করোনার ভ্যাকসিন, এই চিন্তাই এখন সকলের মনে। সেই চিন্তাকেই তাঁদের মণ্ডপসজ্জার মাধ্যমে তুলে ধরছেন পুরাতন মালদহের সাহাপুর যাদব সমিতির সদস্যরা। তাঁদের থিম মুক্তি। অন্য কোনও কিছু থেকে মুক্তি নয়, করোনা থেকে মুক্তির আশা ফুটিয়ে তুলছেন উদ্যোক্তারা। যাদব সমিতির আয়োজকরা জানান, মণ্ডপের ভিতরে তৈরি করা হয়েছে দু’টি ল্যাবের দৃশ্য। সেই ল্যাব দু’টিতে চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীরা বসে করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। মণ্ডপের ভিতরে দেওয়ালের বিভিন্ন অংশ থেকে বেরিয়ে এসেছে অনেকগুলি হাত। সকলেই যেন হাত বাড়িয়ে অধীর আগ্রহে চাইছে ভ্যাকসিন। মণ্ডপের ছাদের দিকে থাকবে ভগবান বিষ্ণুর প্রতিমা। তাঁর কাছেই থাকবে অমৃত। এই দৃশ্যের মাধ্যমে উদ্যোক্তারা বোঝাতে চেয়েছেন যে ভগবান বলছেন, কর্ম করো। নিরলস কর্ম ও প্রচেষ্টার ফলেই মিলবে করোনার হাত থেকে মুক্তির উপায়। এভাবেই চেষ্টা করতে করতে একসময় ভ্যাকসিন হয়তো আবিষ্কারও করে ফেলবেন চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা। তারপর কী হবে? করোনার হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার পর বিশ্ববাসীর বাঁধনহারা আনন্দ ও উচ্ছ্বাস, বাদ্যযন্ত্র নিয়ে গানবাজনার দৃশ্যও ফুটে উঠবে যাদব সমিতির মণ্ডপের মধ্যেই। আর সেসবেরই মাঝে শান্তির প্রতীক হয়ে ডানা মেলে ঘুরে বেড়াবে অজস্র পায়রা। উদ্যোক্তারা আরও জানিয়েছেন, থিমের চমক শুরু হয়ে যাবে মণ্ডপের বাইরে থেকেই। মণ্ডপের সামনেই দেখা যাবে একটি বড় ঘড়ি। প্রায় ১০ ফুট উচ্চতার সেই ঘড়ির কাঁটা বুঝিয়ে দেবে সময় এখন পৌনে ১২টা। সেই ঘড়ির সঙ্গে যুক্ত থাকবে একটি মানুষ। সে ওই ঘড়িতে ১২টা বাজার জন্য অপেক্ষা করছে। ১২টাই সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, যখন আসবে সুসময়। সেই ভালো সময় আসতে আর বেশি দেরি নেই, সেটাই বুঝিয়ে দেওয়া হবে ওই ঘড়ির প্রতীকের মধ্য দিয়ে।
সাহাপুর যাদব সমিতির পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য শিবেন ঘোষ বলেন, আমাদের মুক্তি থিম দর্শনার্থীদের মন ছুঁয়ে যাবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই মণ্ডপ বানানো হচ্ছে। স্যানিটাইজারেরও ব্যবস্থা থাকবে। ছয় হাজারেরও বেশি মাস্ক রাখা হবে। সেসব দর্শনার্থীদের মধ্যে বিলি করা হবে। প্রয়োজন পড়লে আরও মাস্ক নিয়ে আসা হবে। এবছর আমাদের পুজোর বাজেট প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা। এই থিম ফুটিয়ে তুলতে ব্যবহার করা হচ্ছে মডেল। থার্মোকল, ফাইবার, তুলো, মাটি, রঙিন কাগজ দিয়ে মডেলগুলি বানানো হচ্ছে। যাদব সমিতির মণ্ডপ গড়ে তোলার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন চিত্রশিল্পী অজিতকুমার সর্দার। তিনি বলেন, সবদিক থেকেই আমাদের জীবন এখন নানা বিধিনিষেধে বাঁধা পড়ে গিয়েছে। এই অবস্থা থেকে আমরা সকলেই মুক্তি পেতে চাই। করোনার থেকে মুক্তি পেতে চাই। তাই আমাদের থিম মুক্তি।