কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
গত লোকসভা ভোটের পর দক্ষিণ দিনাজপুরে তৃণমূল দলের অন্যতম কাণ্ডারী বিপ্লববাবুকে সরিয়ে অর্পিতা ঘোষকে জেলা সভাপতি করেছিল দল। তারপরই বিপ্লববাবু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। এবছর ফের তাঁকে দলে ফেরানোর প্রচেষ্টা শুরু করে দল। তাতে বিপ্লববাবুর শর্ত ছিল সরাতে হবে অর্পিতাকে। সেই শর্ত পূরণ হতেই মাস কয়েক আগে ফের তৃণমূলে যোগ দেন বিপ্লববাবু। কিন্তু তার পর থেকেইে তাঁকে একপ্রকার বসিয়ে রাখা হয়েছে বলে বিপ্লববাবুর ঘনিষ্ঠ সূত্রের অভিযোগ। এমনকী নতুন জেলা কমিটিতেও তাঁকে কোনও পদ দেওয়া হয়নি। আর তারপর থেকে বিপ্লববাবুকেও দলের কোনও কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে জেলা জুড়ে তৃণমূলের অন্দরমহলে জল্পনা বাড়তে থাকে। বিশেষ করে বিধানসভা ভোটের আগে বিপ্লববাবুকে দলের কাজে ভেড়ানো যে জরুরি তা উপলব্ধি করেছে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের টিম আইপ্যাকও। মূলত ওই টিমের প্রেসক্রিপশন মেনেই সদ্য শিলিগুড়িতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কমিটির নেতৃত্বের সঙ্গে বিপ্লববাবুরও ডাক পড়ে। সেখানে বিপ্লববাবুকে নিয়ে কোর কমিটির বৈঠক করার নির্দেশ দেন অভিষেক। এদিনই ছিল সেই বৈঠক।
সকাল ১১টা থেকে টানা দুপুর ৩টে পর্যন্ত কোর কমিটির বৈঠক চলে। বৈঠকে দলের জেলা চেয়ারম্যান শঙ্কর চক্রবর্তী, সভাপতি গৌতম দাস, বিপ্লব মিত্র, কো-অর্ডিনেটর সুভাষ চাকি, ললিতা টিগ্না সহ বিধায়ক বাচ্চু হাঁসদা, তোরাফ হোসেন মণ্ডল উপস্থিত ছিলেন। কোর কমিটির সদস্যরা ছাড়াও পিকের টিমের চার সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এরপর বিপ্লববাবুর কী সমস্যা তা শুনতে চাওয়া হয়। বিপ্লববাবু স্পষ্ট জানিয়ে দেন, নতুন জেলা কমিটি নিয়ে কোনওভাবে বিধানসভা ভোটে জয়লাভ করা সম্ভব নয়। এমন একাধিক নেতাকে জেলা কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছেষ যাঁদের বিরুদ্ধে বেশকিছু অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ রয়েছে। সেক্ষেত্রে তিনি গঙ্গারামপুর, হরিরামপুর, বংশীহাড়ির একাধিক নেতার নাম উল্লেখ করেন। যদিও কোর কমিটির অধিকাংশ নেতা বিপ্লববাবুর সেই দাবিকে অস্বীকার করেন। কোর কমিটির বৈঠকের ভেতরে এনিয়ে তুমুল বচসা শুরু হয়। সেখানেই জেলা কমিটির কয়েকজন সদস্যকে সরানোর বিষয় নিয়ে সরব হন বিপ্লববাবু। ওই দাবি নিয়ে জেলা নেতৃত্বের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়। পিকের টিমের সদস্যরা আলোচনা শুনে নির্দেশ দেন, কমিটি নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তা দ্রুত নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সমাধান করতে হবে। দলীয় সূত্রের খবর, যদিও বর্তমান সভাপতি গৌতমবাবু জানিয়ে দেন ওই দাবি মানা যাবে না।
বৈঠক শেষে অবশ্য গৌতমবাবু বলেন, বিপ্লবদা আমার কাছে রাজনীতিতে গুরুদেব। আমি সমস্ত কর্মসূচিতে তাঁকে বলে থাকি। তিনি কিছুদিন অসুস্থ ছিলেন। তাই বৈঠক করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। আগামীতে আমরা একসঙ্গে চলব। একাধিক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। বিপ্লবদা যে সমস্যার কথা বলেছেন তা আমরা আলোচনা করব। নতুন কমিটি নিয়ে নিয়ে যা সমস্যা তা দ্রুত সমাধান করা হবে। তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, আমাকে কোর কমিটির বৈঠকে ডাকা হয়েছে। যা বলার তারা বলবে। আমি দীর্ঘদিন এই দলে রয়েছি। দলের ভালো খারাপ বুঝি। যা যা সমস্যা দলে রয়েছে তা এদিন বৈঠকে বলেছি। দল যা ভালো বুঝবে তাই সিদ্ধান্ত নেবে।
বৈঠকের পরে জেলা তৃণমূলের কার্যালয়ে সভাপতি গৌতম দাস জানান, দলরে চারনেতাকে খিচুদিন আগে শোকজ করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে দেবাশীষ পাল (কার্যকরী সভাপতি), শুভাশিস পাল ওরফে সোনা (কার্যকরী সভাপতি,মেন্টর), সুনির্মল জ্যোতি বিশ্বাস (সাধারণ সম্পাদক) কে বহিস্কার করা হল। আর যুব নেতা অভিষেক গুহুর শোকজের জবাবে জেলা নেতৃত্ব সন্তুষ্ট হওয়ায় তাকে দলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।