নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ: ‘ওপেন বুক’ পদ্ধতিতে পরীক্ষার দেওয়ার পর উত্তরপত্র অনলাইনে আপলোডের সময়সীমা কমবে কি না, তা নিয়ে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের মধ্যেও বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে দেওয়া এই সংক্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চিঠির বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে গৌড়বঙ্গের ছাত্রছাত্রীরাও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। তাঁরাও খোঁজখবর শুরু করে দিয়েছেন। যদিও এব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনও কোনও নির্দেশিকা জারি করেনি। ফলে পরীক্ষার পর উত্তরপত্র জমা দেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টা সময়ের জন্য নির্দেশিকা জারি হয়েছিল, তা এখনও বহাল রয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকরা জানিয়েছেন। শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ওই সময়সীমা কমিয়ে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ পরীক্ষা নিয়ামক বিনয়কৃষ্ণ হালদার বলেন, আমরা এখনও পর্যন্ত ইউজিসি থেকে কোনও নির্দেশ পাইনি। পরীক্ষার সময় সময় সংক্রান্ত কোনও নির্দেশ এলে রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ১ অক্টোবর থেকে পরীক্ষা শুরু হতে চলেছে। পরীক্ষা চলবে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত। পরীক্ষার ফলপ্রকাশ হবে ৩১ অক্টোবর। স্নাতকোত্তরের তৃতীয় এবং চতুর্থ সেমেস্টারের পাশাপাশি স্নাতকের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা নেওয়া হবে। মালদহের পাশাপাশি উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের কলেজগুলিও বর্তমানে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় রয়েছে। সবমিলিয়ে তিন জেলার প্রায় ৩২ হাজার ছাত্রছাত্রী এবার পরীক্ষায় বসতে চলেছেন। পরীক্ষার সূচী এখনও প্রকাশিত হয়নি। পরীক্ষার দিনগুলিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে চালু করা পোর্টালে প্রশ্নপত্র আপলোড করা হবে। তা নির্দিষ্ট পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে পরীক্ষার্থীরা ডাউনলোড করতে পারবেন। পরীক্ষা শেষের পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উত্তরপত্র আপলোড করতে হবে। মালদহে ইন্টারনেট পরিষেবার মান ততটা ভালো নয়। ফলে উত্তরপত্র আপলোডের ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা হতে পারে বলে ছাত্রছাত্রীরা আশঙ্কা করছিলেন। তারউপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়টি জানার পর শঙ্কা আরও বেড়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক বলেন, আমাদের মতোই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও পরীক্ষা শেষের পর উত্তরপত্র আপলোডের জন্য ২৪ ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল। সম্প্রতি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে ইউজিসি একটি চিঠি দেয়। ইউজিসি অত সময় দেওয়ার পক্ষপাতী নয় বলে বিশ্ববিদ্যালয়কে জানিয়েছে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেই শুধু নিয়ম প্রযোজ্য হয় না। আমাদের ক্ষেত্রেও তা হতে পারে। ফলে বিষয়টি নিয়ে আমরাও দুশ্চিন্তায় রয়েছি। কলকাতার মতো জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা ততটা ভালো নয়। ফলে আমাদের ক্ষেত্রে সময় কমানো মুশকিল হবে। তাছাড়া জেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থাও উন্নত নয়। ফলে স্বল্প সময়ের মধ্যে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসিভিং কাউন্টারে উত্তরপত্র জমা দেওয়াও সকলের পক্ষে সম্ভব হবে না। বিষয়টি নিয়ে আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছি।