বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
সূত্রের খবর, এই শহরে এখনও বহু বাড়িতে নেই টয়লেট। দীর্ঘদিন লকডাউন থাকায় বহু উপভোক্তা অর্থ পেয়েও টয়লেট নির্মাণ করতে পারেননি। কাজেই নির্মল টাউনের তকমা এখনই মিলছে না বলে অনেকের আশঙ্কা। পুরসভার বিরুদ্ধে এনিয়ে বিস্তর প্রশ্ন উঠেছে।
উত্তরবঙ্গের অঘোষিত রাজধানী শহর শিলিগুড়িকে নির্মল টাউন করার দাবি বহুদিনের। এবার পুরকর্তৃপক্ষ সেই দাবি পূরণের তৎপর হয়েছে। কয়েকদিন আগে পুরসভার আধিকারিকরা এ ব্যাপারে বৈঠক করেন। পুরসভা সূত্রের খবর, টয়লেটের মান যাচাই করতে তৃতীয়পক্ষকে দিয়ে সমীক্ষা করানো এবং নাগরিকদের কাছ থেকে ঘোষণাপত্র সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পুরসভার কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া বলেন, ওডিএফ বা নির্মল টাউন ঘোষণা করার আগে নাগরিকদের কাছ থেকে ঘোষণাপত্র নিতে হয়। প্রকল্পের নিয়ম অনুসারেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পুরসভার এক আধিকারিক বলেন, বাড়িতে শৌচাগার আছে কি না এ ব্যাপারে শহরের প্রায় সর্বস্তরের নাগরিকের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হবে ঘোষণাপত্র। এ জন্য প্রতিটি প্রাথমিক ও হাইস্কুলের শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। স্কুলে টয়লেট আছে কি নেই, সেই ব্যাপারে তাঁরা ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করবেন। একইভাবে ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক এবং মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের কাছ থেকে ঘোষণাপত্র নেওয়া হবে। বাড়িতে শৌচাগার আছে কি না সেই ব্যাপারে তাঁরা ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করবেন। শীঘ্রই এই অভিযান শুরু হবে। এর থেকেই বোঝা যাবে শহরে টয়লেটহীন বাড়ির সংখ্যা।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন আগে মিশন নির্মল বাংলা থেকে অর্থ বরাদ্দ করা হলেও এই শহরে এখনও প্রস্তাবিত সমস্ত বাড়িতে টয়লেট হয়নি। পুরসভা সূত্রের খবর, বেসলাইন সার্ভে রিপোর্ট অনুসারে শহরে প্রায় ৪০৮৩টি বাড়িতে টয়লেট তৈরির কথা। এক একটি টয়লেট নির্মাণে খরচ হবে ১০ হাজার ৯৯৯ টাকা। যারমধ্যে উপভোক্তা ১০০০ টাকা, পুরসভা ২০০০ টাকা এবং সরকার দেবে ৭৯৯০ টাকা। ইতিমধ্যে এ জন্য পুরসভাকে ৩ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা রাজ্য সরকার বরাদ্দ করেছে। কিন্তু এখনও ২০০০ বাড়িতে শৌচাগার তৈরি হয়নি বলে অভিযোগ। করোনা মোকাবিলায় টানা কয়েক মাস লকডাউন থাকায় উপভোক্তাদের একাংশ অর্থ পেয়েও টয়লেট নির্মাণের কাজ শুরু করতে পারেননি। এখনও তাঁদেরকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে ছুটতে হয় মহানন্দা নদীর ধারে। আবার কেউ কেউ প্রতিবেশীর বাড়িতে যান।
শহরের এমন পরিস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে পুরসভার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। পুরসভার ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর তথা তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি (সমতল) রঞ্জন সরকার বলেন, রাজ্য সরকারের মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্প থেকে অর্থ বরাদ্দ করা হলেও পুরসভা বাড়ি বাড়ি টয়লেট তৈরি করতে ব্যর্থ। তাই এখনও এই শহর নির্মল টাউনের মর্যাদা পায়নি। এটা আমাদের কাছে লজ্জার।
পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্য অবশ্য বলেন, এই শহরে পাকা টয়লেটহীন বাড়ি নেই বললেই চলে। হাতেগোনা কিছু বাড়িতে পাকা টয়লেট নেই। ওই সব বাড়ির মালিকদের অর্থ প্রদান করা হয়েছে। সেইসব বাড়িতে টয়লেট যাতে দ্রুত তৈরি করা সম্ভব হয়, সেই ব্যাপারে নজর দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই এই শহর নির্মল শহরের মর্যাদা পাবে বলে আশা করছি।