সংবাদদাতা, বালুরঘাট: দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় দলীয় সংগঠনকে শক্তিশালী করতে সঙ্গে নিতে হবে বিপ্লব মিত্রকে। কলকাতায় বৈঠকে রাজ্য নেতৃত্বের তরফ থেকে জেলা নেতৃত্বকে এমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দলের প্রয়োজনে বিপ্লববাবুর সঙ্গে বৈঠক করে তাঁর পরামর্শ নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর ললিতা টিগ্গা বলেন, বিপ্লবদা দীর্ঘদিন ধরে দল করছেন। তিনি তৃণমূলে ফেরার পর তাঁকে কি পদ দেওয়া হবে, তা রাজ্য নেতৃত্ব দেখছে। আমাদের শুধু নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিপ্লবদার সঙ্গে আলোচনা করে কাজ করার জন্য। রাজ্যের তরফে যেমন নির্দেশ আমাদের দেওয়া হয়েছে, আমরা সেই মতোই কাজ করব।
এব্যাপারে বিপ্লববাবুর মন্তব্য জানার চেষ্টা করা হলেও তাঁর মোবাইল সুইচড অফ থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি।
শনিবার কলকাতায় রাজ্য নেতৃত্ব বৈঠকে বসে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে। জেলা থেকে সভাপতি, চেয়ারম্যান, যুব সভাপতি, কো-অর্ডিনেটরদের সঙ্গে রাজ্যের তরফে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সুব্রত বক্সি, পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও জেলার দায়িত্বে থাকা টিম পিকের সদস্যরা। জানা গিয়েছে, সেই বৈঠকে জেলা নেতৃত্বকে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে যে সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে চলতে হবে। কোনওপ্রকার গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বরদাস্ত করা হবে না। রাজ্যের তরফে বিপ্লববাবুর পরামর্শ নিয়ে চলার যে বার্তা দেওয়া হয়েছে তা থেকে রাজনৈতিক মহলের অনুমান, ’২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে বিপ্লব মিত্রকে দলের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ডে যুক্ত করতে চাইছে রাজ্য নেতৃত্ব।
শনিবার কলকাতায় যে বৈঠক হয়েছে, তাতে জেলায় দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে কড়া বার্তা দেওয়া হয়। সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, জেলায় কি চলছে, সেসব কিছুর উপর রাজ্যের নজর রয়েছে। কেউ ঘোঁট পাকালে তার ডানা ছেটে দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। দলের আদি ও নব্য সদস্যদের একসঙ্গে নিয়েই চলার বার্তা দেওয়া হয়েছে। এদিকে মাস খানেক আগে বিপ্লব মিত্র তৃণমূলে যোগদান করলেও এখনও অবধি তাঁকে কোনও পদ না দেওয়ায় জেলাজুড়েই জল্পনা বাড়ছে। এখনও পর্যন্ত দলীয় কর্মসূচিতে সেভাবে তাঁকে দেখা যায়নি। বিপ্লবের অনুগামীরা বিষয়টি নিয়ে ক্ষুন্ন। তাঁরাও একপ্রকার ঘরে বসে রয়েছেন। বিষয়টি রাজ্যের নজরেও এসেছে। তাই দ্রুত বিপ্লববাবুর সঙ্গে বৈঠক করে সাংগঠনিক রণকৌশল তৈরি করবার বার্তা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, নতুন কমিটির বিভিন্ন পদের জন্য প্রস্তাবিত নামগুলির মধ্যে একটি নাম নিয়েও আপত্তি উঠেছে কলকাতার সভায়। বালুরঘাট শহরেরই এক নেতার নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রস্তাবিত কমিটি থেকে। তাঁর বদলে শহরেরই এক অন্য নেতার নাম সেখানে ঢোকানোর কথা বলা হয়। সূত্রের খবর, প্রস্তাবিত ওই নেতার বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি অভিযোগ পিকের টিমের সদস্যরা রাজ্য নেতৃত্বের কাছে জমা দিয়েছে। এবার কমিটিতে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতানেত্রীকে নিয়ে আসার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ওই নেতাকে কমিটিতে রাখতে নারাজ দল। বদলে শহরেরই এক প্রয়াত নেত্রীর স্বামীর নাম প্রস্তাব করতে বলা হয়েছে।
এব্যাপারে ললিতা টিগ্গা বলেন, আমাদের প্রস্তাবিত জেলা কমিটি থেকে এক জনের নাম বাদ দেওয়ার জন্য রাজ্যের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই স্থানে অন্য এক জনকে দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে বলা হয়েছে।