কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
পুলিস খবর পেয়ে ঝুলন্ত দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। শুক্রবার ময়নাতদন্তের পর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রায়গঞ্জ থানার পুলিস। জেলায় আরও একবার পরিযায়ী শ্রমিকের আত্মহত্যা নিয়ে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
এই বিষয়ে রায়গঞ্জ পুলিস জেলার এসপি সুমিত কুমার বলেন, ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রায়গঞ্জ থানার পুলিস।
মজরুল শেখের ঘরে রয়েছেন সন্তানসম্ভবা স্ত্রী। সেইসঙ্গে রয়েছে দুই ছোট্ট সন্তান। মুম্বইতে মজুরের কাজ করে সংসার চালাতেন তিনি। কিন্তু এবছরের শুরুতেই করোনা সংক্রমণ রোখার জন্য কেন্দ্র সরকার যে লকডাউন ঘোষণা করেছিল, তার গেরোয় পড়ে কাজ হারান তিনি। বাধ্য হয়ে মুম্বইতেই বেশ কিছুদিন বিনা উপার্জনে থাকতে হয়েছিল তাঁকে। এরপর শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনে বাড়ি ফেরেন মজরুল। জমানো কিছু টাকা দিয়ে রায়গঞ্জে ফেরার পর কোনওরকমে সংসার চালাচ্ছিলেন তিনি। পরে আনলক পর্ব শুরু হলেও কাজ আর জোটেনি মজরুলের। দীর্ঘ চার-পাঁচ মাস ধরে বাড়িতেই বসেছিলেন তিনি। এদিকে টান পড়ছিল জমানো টাকায়। দুই সন্তান ও সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর মুখে অন্ন তুলে দেওয়াটাই সমস্যা হয়ে পড়েছিল তাঁর কাছে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আর্থিক সঙ্কটে পড়ে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। শেষমেশ গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
মৃতের ভাই রেজাউল হক বলেন, দাদা মুম্বইতে থাকত। সেখানে মজুরের কাজ করত। লকডাউন শুরু হওয়ার পরপরই গ্রামে ফিরে এসেছিল। তারপর আর রোজগারের রাস্তা পাচ্ছিল না। সেই কারণেই দাদা আত্মহত্যা করেছে বলে মনে করছি।
এর আগেও রায়গঞ্জ ব্লকের এক বাসিন্দা আত্মঘাতী হয়েছিলেন বলে তাঁর তার পরিবারের দাবি ছিল। সেই ব্যক্তি ভিন রাজ্যে নার্সারির কাজ করতেন। সেই ঘটনার পিছনেও আচমকা লকডাউনের ফলে ব্যবসায় মোটা অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির কথাই উঠে এসেছিল। তারপর স্থানীয় এক বাজনাদার
অভাবের তাড়নায় আত্মহত্যা করেছিলেন বলে দাবি। তাঁর পরিবারের তরফে বলা হয়েছিল, লকডাউন ও করোনা পরিস্থিতিতে কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানেই আর বাজনা বাজাবার ডাক পাচ্ছিলেন না তিনি। উপার্জন হারিয়ে মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে ওই কাণ্ড ঘটান তিনি। লকডাউনের কোপে সম্বলহীন হয়ে পড়া পর পর তিনটি আত্মহননের ঘটনা অস্বস্তিতে ফেলেছে প্রশাসনকেও।