গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, পুজোর কয়েক মাস আগে থেকেই কুশমণ্ডির মহিষবাথান মুখোশ সমবায় সমিতিতে মণ্ডপসজ্জার কাজের বরাত আসত একের পর এক। তারপর অর্ডার মাফিক মুখোশ শিল্পীরা সূক্ষ্ম কাজ করে সাজিয়ে তুলতেন মণ্ডপগুলি। বছরের এই সময়ে যে অর্ডার আসত, তার উপর নির্ভর করেই প্রায় সারা বছরের উপার্জন হতো ওইসব শিল্পীদের। মুখে হাসি ফুটতো শিল্পীদের পরিবারের সদস্যদের। সেই টাকায় কেনা হতো বাড়ির ছোটদের জন্য নতুন জামাকাপড়। কিন্তু এবার তাঁদের সেই উপার্জনে থাবা বসিয়েছে করোনা। পুজোর একমাস বাকি থাকলেও এখনও পর্যন্ত কোনও পুজো উদ্যোক্তা যোগাযোগ করে কাজের বরাত দেননি। আদৌ কাজ আর মিলবে কি না, তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন শিল্পীরা। করোনা ও লকডাউনের কারণে এমনিতেই টানা ছয়মাস বসে থাকতে হয়েছে তাঁদের।
কুশমণ্ডি মহিষবাথান মুখোশ সমবায় সমিতির সম্পাদক পরেশ সরকার বলেন, প্রতি বছরই আমরা শিল্পীদের দিয়ে পুজোর মণ্ডপসজ্জার কাজ করিয়ে থাকি। মুখোশ শিল্পীরা পুজোর কয়েকমাস আগে থেকেই মণ্ডপসজ্জার জন্য নানা ডিজাইনের মুখোশ তৈরি করতেন। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিগ বাজেটের পুজো উদ্যোক্তারা আমাদের এখানে এসে কাজের বরাত দিতেন। গতবার এখানকার শিল্পীরা কলকাতার দমদম পার্ক পুজো প্যান্ডেলের মণ্ডপসজ্জার কাজ করেছেন। এছাড়া বীরভূম ও বাঁকুড়ার পুজোর কাজও করা হয়েছে। এবার করোনা পরিস্থিতির জন্য এখনও সমবায় সমিতিতে কাজের বরাত আসেনি। আর বেশিদিন সময়ও নেই। কাজ আদৌ আসবে কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি। করোনা পরিস্থিতির জন্য এমনিতেই টানা ছয়মাস মুখোশ শিল্পীরা বসেছিলেন কাজের অভাবে।
মুখোশশিল্পী নীরেন সরকার বলেন, পুজো মানেই বাড়তি খরচ। তা মেটাতে বাড়তি উপার্জন হতো মণ্ডপের কাজ করে। দিনরাত এক করে কাজ করতাম, যাতে বেশি উপার্জন হয়। কিন্তু এবার আমাদের আশা-ভরসা সব শেষ। আর কেউ কাজের অর্ডার দিতে আসবেন বলে মনে হয় না। করোনা শুরুর সময় থেকেই কাজ নেই। পেটের দায়ে অনেকেই মুখোশ বানানো ছেড়ে অন্যান্য কাজ করছেন। ভেবেছিলাম, পুজোর সময় কাজ এলে এই ক্ষতি হয়তো কিছুটা পূরণ হবে। কিন্তু সেই আশা আর পূরণ হল না।
বাড়ির লোকের মুখে পুজোর দিনগুলিতে কীভাবে হাসি ফোটাবেন, সেই চিন্তাতেই এখন উদ্বিগ্ন কুশমণ্ডির মুখোশশিল্পীরা।