সংবাদদাতা, ইংলিশবাজার: দীর্ঘক্ষণ ধরে এলাকায় পরিষেবা ব্যাহত হওয়ায় মানিকচকে বিদ্যুৎ দপ্তরের অফিসে ভাঙচুর চালাল ক্ষুব্ধ জনতা। বৃহস্পতিবার রাতে এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযোগ, বিদ্যুৎ দপ্তরের একটি গাড়ি সহ দপ্তরের বিভিন্ন আসবাবপত্র এবং একাধিক মেশিন ভাঙচুর করা হয়। দপ্তরের কর্মীদেরও হেনস্তা করা হয় বলে অভিযোগ। পরে মানিকচক থানার পুলিস এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে মালদহের মানিকচক ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে টানা লোডশেডিং শুরু হয়। রাত পর্যন্ত ভোগান্তি চলতে থাকে। বিদ্যুৎ পরিষেবা বেহাল হওয়ার ফলে ওই এলাকার কয়েকটি গ্রামের মানুষজন অসুবিধায় পড়েন। ভ্যাপসা গরমে ভোগান্তি বাড়তে থাকে এলাকার বয়স্কদের। সমস্যায় পড়ে পড়ুয়ারা। রাত বাড়লেও বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক না হওয়ায় বাসিন্দাদের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে। রাত দশটা নাগাদ বিদ্যুৎ দপ্তরের অফিস সংলগ্ন এলাকার কিছু লোকজন অফিসে এসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁদের দাবি, দ্রুত বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করতে হবে। বিক্ষোভের খবর পয়ে মানিকচক থানার পুলিস ঘটনাস্থলে আসে। তারা বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। কিন্তু পুলিস চলে যেতেই আবার জড়ো হন এলাকাবাসী। তখন শতাধিক বাসিন্দা অফিসে ঢুকে তাণ্ডব চালান বলে অভিযোগ। কর্মরতদের অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যান। ভাঙচুরের পাশাপাশি কর্মীদেরও শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
বিদ্যুৎ দপ্তরের মানিকচক অফিসের কর্মী মোহাম্মদ আশরাফুল হক বলেন, পরিকাঠামোগত সমস্যা ছিল। জেলার মূল অফিস থেকেই মানিকচকের বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে সমস্যা ছিল। আমাদের কাছে খবর আসে, ৩৩ হাজার ভোল্টের তারের উপর গাছের ডাল ভেঙে পড়ে। আমরা পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছিলাম। এর মধ্যেই শতাধিক মানুষ অফিসে এসে ইট, পাথর ছুঁড়তে থাকে। আমাদের শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়। তারা বিদ্যুৎ অফিসের জরুরি যন্ত্রপাতি সহ গাড়ি, গেট, জানালা প্রভৃতি ভাঙচুর করে। কোনওরকমে আমরা পালিয়ে বাঁচি। এই ধরনের ঘটনা আগেও ঘটেছে। ঘটনার জেরে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। পরে গভীর রাতে আমরা অনেক চেষ্টা করে এলাকার বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করি। ঘটনায় মানিকচক থানায় অফিস থেকে লিখিতভাবে অভিযোগ করা হয়েছে।
মানিকচক থানার এক আধিকারিক জানান, বিদ্যুৎ অফিস থেকে ভাঙচুরের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য আশিস মণ্ডল বলেন, গরম পড়লেই এখানে বিদ্যুৎ বিভ্রাট শুরু হয়ে যায়। এবিষয়ে আমরা বিদ্যুৎ দপ্তরকে অনেকবার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।
মানিকচকে বিদ্যুৎ দপ্তরে ভাঙচুরের পর। নিজস্ব চিত্র