বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত ইন্সপেক্টরের নাম মহেন্দ্র সিং ভাট্টি (৫৬) ও জওয়ানের নাম অনুজ কুমার (২৯)। প্রথমজনের বাড়ি অমৃতসর। দ্বিতীয়জন উত্তরপ্রদেশের শাহারনপুরের বাসিন্দা। ১৪৬ নম্বর ব্যাটালিয়নে রায়গঞ্জের মালদাখণ্ডে তাঁরা কর্মরত ছিলেন। ধৃত জওয়ানের নাম উত্তম সূত্রধর। তিনি ত্রিপুরার বাসিন্দা। বিএসএফ সূত্রের খবর, সোমবার রাতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতার সংলগ্ন এলাকায় পাহারা দিচ্ছিলেন উত্তম সূত্রধর। গভীর রাতে নিজের সার্ভিস ইনসাস রাইফেল থেকে শূন্যে দুই রাউণ্ড গুলি চালান তিনি। কিছুটা দূরে সীমান্তে টহল দিচ্ছিলেন ইন্সপেক্টর মহেন্দ্র সিং ভাট্টি। তিনি গুলির শব্দ শুনে জওয়ান অনুজকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে তড়িঘড়ি চলে আসেন। এরপরই আচমকা ওই দু’জনকে লক্ষ্য করে উত্তম লাগাতার গুলি চালাতে থাকেন বলে অভিযোগ। গুলিবিদ্ধ হয়ে দু’জনেই ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়েন। ইন্সপেক্টরের মাথায় গুলি লাগে। নিহত জওয়ান অনুজের বুকে গুলি লেগে ফুঁড়ে বেরিয়ে গিয়েছে। ঘটনার পরেই অভিযুক্ত জওয়ান বিএসএফের কমান্ডারের কাছে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় বিএসএফ ক্যাম্পে।
রাতেই খবর পৌঁছয় রায়গঞ্জ থানায়। পুলিস গিয়ে মৃতদেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে পাঠায়। দু’জনের দেহে একাধিক গুলির ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। ঘটনার তদন্তে যান রায়গঞ্জ জেলা পুলিসের এক ডিএসপি ও থানার আইসি। অভিযুক্ত জওয়ানকে বিএসএফের তরফে রায়গঞ্জ থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তার সার্ভিস রাইফেল। ঘটনার খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে মালদাখণ্ড এলাকার লোকজন ভিড় জমায়। রায়গঞ্জ পুলিস জেলার পুলিস সুপার সুমিত কুমার বলেন, অভিযুক্ত জওয়ানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। ধৃত জওয়ানের বাড়ি ত্রিপুরায়। তাকে জেরা করছে পুলিস। প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে, কয়েকজনের বিরুদ্ধে নানা ক্ষোভ ছিল ওই জওয়ানের। সেই ক্ষোভ থেকেই গুলি চালানোর ঘটনা। কী সেই ক্ষোভ? তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিস। কনস্টেবল উত্তম সূত্রধরের গুলি চালানোর ঘটনায় হতবাক তাঁর সহকর্মীরা। বিএসএফ সূত্রের খবর, ওই জওয়ান বেশ কিছুদিন ধরে চুপচাপ থাকতেন। কারও সঙ্গে তেমন কথা বলতেন না। কিন্তু তিনি যে এমন ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলবেন, তা বিশ্বাস করতে পারছেন না কেউই।
ইন্সপেক্টর ভাট্টিকে কি অভিযুক্ত জওয়ান আগে থেকেই টার্গেট করেছিলেন? তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ইন্সপেক্টর যে সীমান্তে টহল দিচ্ছেন, তা জানা ছিল অভিযুক্ত জওয়ানের। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বা ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ থাকলেও জওয়ান অনুজকে গুলি করা হল কেন? এই প্রশ্নের উত্তর পুলিসের কাছেও স্পষ্ট নয়। পুলিস সব দিকই খতিয়ে দেখছে। ধৃতকে জেরা করলেই প্রকৃত তথ্য উঠে আসবে বলে মনে করছেন পুলিসকর্তারা। বিএসএফের কোনও কর্তাই অবশ্য এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি। প্রতীকী চিত্র