পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
পুলিস জানিয়েছে, মৃতার নাম পারভিন খাতুন (২২)। তাঁর বাপের বাড়ি রায়গঞ্জ থানার কর্ণজোড়ার পিরোজপুরে। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পারভিন সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে স্নাতক উত্তীর্ণ। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কালিয়াগঞ্জের উত্তর চিড়াইলের পেশায় তেলমিলের কর্মী তাহিরুল হোসেনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়েতে তিন লক্ষ টাকা পণ দাবি করেছিল পাত্রপক্ষ। বিয়ের সময় আড়াই লক্ষ টাকা দিতে পেরেছিল কনেপক্ষ। বাকি টাকা পরে মিটিয়ে দেওয়ার কথা হয়। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই বাকি পণের দাবিতে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার শুরু হয় বধূর উপর। সেই অত্যাচার থেকে মেয়েকে বাঁচাতে পারভিনের বাবা মোস্তাফা মহম্মদ কিছুদিন আগে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে আসেন মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে। কিন্তু তাতেও নিস্তার মেলেনি অত্যাচারের হাত থেকে। বাকি ২৫ হাজার টাকার দাবিতে ফের শুরু হয় নির্মম নির্যাতন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, গত বৃহস্পতিবার মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন মোস্তাফা মহম্মদ। সেইসময় মেয়েকে বাপের বাড়িতে নিয়ে আসার কথা তুলেছিলেন তিনি। কিন্তু, তা নাকচ করে দেয় শ্বশুর বাড়ির লোকজন। ওই দিনই মোস্তাফা ফিরে আসেন। শনিবার ওই বধূ ফোনে ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। রবিবার রাত ৮টা নাগাদ কালিয়াগঞ্জ থানা মারফৎ বধূর বাপের বাড়ির লোকজন খবর পান, তাঁদের মেয়ে কালিয়াগঞ্জ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি। সেখানে গিয়ে তাঁরা মৃত অবস্থায় দেখেন মেয়েকে। ওই রাতেই বধূর স্বামী তাহিরুল হোসেন, শ্বশুর আজিজুর হক, শাশুড়ি জ্যোৎস্না বেগম, দেওর জাহাঙ্গির আলি ও ননদ আরজনা খাতুনের বিরুদ্ধে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়।
মৃতার ভাই আব্দুল গফ্ফর বলেন, দিদি গ্র্যাজুয়েশন পাশ করেছিল। তারপরেই বাড়ি থেকে বিয়ে দেওয়া হয়। জামাইবাবু তেলমিলে কাজ করেন বলে মোটা অঙ্কের পণ চেয়েছিল। তিন লক্ষ টাকা পণে বিয়ের পাকা কথা হয়। বাবা ধার করে বিয়ের সময় আড়াই লক্ষ টাকা জোগাড় করতে পেরেছিল। বাকি টাকা পরে মিটিয়ে দেওয়ার কথা হয়। কিন্তু, বিয়ের পর থেকেই দিদির উপর অমানবিক অত্যাচার শুরু হয়। দিদি ফোন করলেই কান্নাকাটি করত। কিছুদিন আগে ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। তাতেও ওদের শান্তি হয়নি। সব টাকা না দিলে দিদিকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিল। ওরা সেটাই করল।
মৃতার বাপের বাড়ির আর এক আত্মীয় বলেন, মেয়েকে যে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সেই খবর পর্যন্ত ওরা আমাদের দেয়নি। পুলিস মারফৎ আমরা খবর পেয়েছি। ওদের যেন কঠোরতম শাস্তি হয়।