বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
এলাকাবাসীদের দাবি, আত্রেয়ীর জল ঢুকে পড়ায় ঘরের বেশিরভাগ জিনিসপত্র তাঁরা বের করতে পারেননি। ঘরের ভিতরেই চৌকির উপর অধিকাংশ জিনিস তুলে রাখা আছে। আপাতত বাড়ির পাশেই বাঁধের উপরে কোনওরকমে ত্রিপল টাঙিয়ে থাকছে এলাকার প্রায় ৬০টি পরিবার। আর নজর রাখছে বাড়ির উপর। অন্যত্র চলে গেলেই, জিনিসপত্র চুরি হয়ে যেতে পারে, তাই শত কষ্ট হলেও এলাকা ছাড়তে নারাজ তারা।
এবিষয়ে আত্রেয়ী খাঁড়ি সংলগ্ন ঘাটকালী এলাকার বাসিন্দা রবি দাস, সরস্বতী গুহরা বলেন, আমাদের এখানে সপ্তাহ খানেক আগে জল ঢুকেছে। প্রশাসনের তরফে কেউ আমাদের সাহায্য করতে আসেননি। কেউ দেখতেও আসেননি। আমরা ঘর ছেড়ে দূরে কোথাও যেতে পারছি না। কারণ, সব জিনিসপত্র ঘরের মধ্যেই রয়েছে। এলাকা ফাঁকা হয়ে গেলে সব লুট হয়ে যাবে। বাঁধের উপর থাকতে খুব অসুবিধা হচ্ছে। ভেজা জমির উপর থাকছি। সাপ, ব্যাঙ, পোকামাকড়ের উৎপাতে অতিষ্ঠ।
এবিষয়ে বালুরঘাটের মহকুমাশাসক বিশ্বরঞ্জন মুখ্যোপাধ্যায় বলেন, বালুরঘাট শহরে এখনও বন্যা ঘোষিত হয়নি। তবে আত্রেয়ীর খাঁড়ি দিয়ে কিছু এলাকায় জল ঢুকেছে। আত্রেয়ীর জল এখনও বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। আমাদের তরফ থেকে ফ্লাড রেসকিউ শেল্টার বানানো হয়েছে। দুর্গত মানুষ চাইলেই সেখানে আশ্রয় নিতে পারবেন। ঘাটকালী এলাকার বাসিন্দাদেরও আমাদের ফ্লাড রেসকিউ শেল্টারে আশ্রয় নিতে বলেছি। কী কারণে তাঁরা সেখানে যেতে চাইছেন না, তা জানি না।
এদিকে আত্রেয়ীর জল বৃদ্ধি পাওয়ায় বালুরঘাট শহর সংলগ্ন বেলাইন এলাকার বহু বাড়ি জলমগ্ন। ওই এলাকায় ঢোকার মূল রাস্তায় এক কোমর জল জমে গিয়েছে। আপাতত ওই এলাকার বাসিন্দারা জলবন্দি। বহু পরিবার স্থানীয় স্কুল ও নিরাপদ জায়গায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। ওই এলাকার বাসিন্দা গোবিন্দ সিং ও মিঠু সিং বলেন, আমাদের এলাকায় প্রায় ১০০টি পরিবার রয়েছে। পাড়ায় ঢোকার একমাত্র রাস্তায় মঙ্গলবার রাত থেকে এক কোমর জল জমে। এখন বাইরে বের হতে পারছি না। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও কিনতে পারছি না। আরও দুই বাসিন্দা সঞ্জিত সিং ও দোলন সরকার বলেন, রাতের মধ্যে ঘরের ভিতরে জল ঢুকে গিয়েছে। বাধ্য হয়ে বুধবার আমরা স্থানীয় স্কুলে আশ্রয় নিয়েছি।
প্রসঙ্গত, বালুরঘাট শহরের আত্রেয়ী নদী বৃষ্টির জলে ফুলেফেঁপে উঠেছে। ইতিমধ্যেই জলস্তর প্রাক বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। এভাবে জল বাড়তে থাকলে দ্রুত তা বিপদসীমা অতিক্রম করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে আত্রেয়ীর খাঁড়িগুলি দিয়ে জল ঢুকে বালুরঘাটের চকবাকর, আত্রেয়ী খাঁড়ি, ঘাটকালী, খিদিরপুর, হালদার পাড়ার কিছু অংশ, চকভৃগুর কিছু এলাকা ও বেলাইনের সিং পাড়া জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। জেলার কুইক রেসপন্স টিম প্রতি ঘণ্টায় নজরদারি চালাচ্ছে।