পঠন-পাঠনে আগ্রহ বাড়লেও মন চঞ্চল থাকবে। কোনও হিতৈষী দ্বারা উপকৃত হবার সম্ভাবনা। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
এব্যাপারে মালদহের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, জেলার কিছু কিছু নার্সিংহোম এবং বেসরকারি হাসপাতাল রোগীদের ফিরিয়ে দিচ্ছে। বিষয়টি আমাদের নজরেও এসেছে। এব্যাপারে শীঘ্র রাজ্যকে জানানো হবে। রাজ্যের নির্দেশ মতো আমরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। বর্তমানে আমরা সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এইসময় সকলে প্রশাসন তথা সরকারকে সাহায্য করছে। এই মুহূর্তে বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলির এই ধরনের আচরণ মেনে নেওয়া যায় না।
উল্লেখ্য, মালদহে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আগে থেকে বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলি টালবাহানা শুরু করে। লকডাউন শুরু হওয়ার পর বেশিরভাগ নার্সিংহোম কার্যত ঝাঁপ বন্ধ করে দেয়। চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থকর্মীর ঘাটতির অজুহাত দিয়ে কর্তৃপক্ষ রোগী ভর্তি নেওয়া বন্ধ করে দেয়। জেলায় করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই প্রবণতা আরও বেড়ে যায়। বর্তমানে মরশুম পরিবর্তনজনিত কারণে জ্বর, সর্দিতে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা বাড়ছে। নার্সিংহোমগুলি সেই রোগীদেরও চিকিৎসা করছে না। করোনা হতে পারে আশঙ্কায় তাঁদের মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ‘ফ্লু-ইউনিটে’ পাঠিয়ে দিচ্ছে। তার ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যেও করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। অন্যদিকে, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপর ক্রমাগত চাপ বাড়ছে।
প্রশাসন এবং জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকদের মতে, এতদিন ওই ধরনের রোগীদের ভর্তি নেওয়ার জন্য নার্সিংহোমগুলি মুখিয়ে থাকত। রোগী টানতে তারা নিজেদের মধ্যেও প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌড়ে নামত। একাধিক অ্যাম্বুলেন্স চালককে টাকার বিনিময়ে রোগী আনার জন্য বলত। ফলে জেলার ব্লক প্রাথমিক এবং গ্রামীণ হাসপাতালগুলি থেকে মেডিক্যালে রেফার হওয়ার রোগীদের অ্যাম্বুলেন্স চালকরা সোজা নার্সিংহোমে নিয়ে যেত। হাসপাতালে বেডের অপ্রতুলতা সহ নানা কারণ দেখিয়ে রোগীর আত্মীদের মনোবল তারা ভেঙে দিত। পাশাপাশি নার্সিংহোমের গুনগান গেয়ে তাদের সহমত আদায় করে নিত। তারপর নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ রোগীর আত্মীয়দের কাছ থেকে মোটা টাকা আদায় করত। পরবর্তীকালে কোনও রোগীর অবস্থার অবনতি হলে ফের তাঁকে মালদহ মেডিক্যালেই পাঠিয়ে দেওয়া হতো। এভাবেই নার্সিংহোমগুলিকে কেন্দ্র করে এক অসাধু চক্র গড়ে উঠেছিল। সেই চক্রের ফাঁদে পড়ে গ্রামগঞ্জের বহু গরীব মানুষ সর্বস্বান্ত হন। অনেককে ভিটেমাটি বিক্রি করেও নার্সিংহোমের ফি দিতে হয়েছে।
অথচ করোনার এই সঙ্কটে নার্সিংহোম মালিকদের একটা বড় অংশ এভাবে রোগীদের ফিরিয়ে দেওয়ায় নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে এরমধ্যেও অবশ্য কয়েকটি নার্সিংহোম রোগীদের ভর্তি নিচ্ছে। এব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নার্সিংহোম মালিক বলেন, আমরা চিকিৎসা পরিষেবা চালু রেখেছি। রোগীদের ভর্তিও নেওয়া হচ্ছে। তবে করোনা চিকিৎসার কোনও পরিকাঠামো আমাদের নার্সিংহোমে নেই। এটা ঠিক, এরমধ্যেও কেউ কেউ রোগীদের ফিরিয়ে দিচ্ছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। অন্য নার্সিংহোম থেকে ফিরে এসে আমাদের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছে এমন উদাহরণও রয়েছে।