কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
কুলিক, মহানন্দা, শ্রীমতি, নাগর, গামারি, পিতানু, টাঙ্গন নদী ফি বর্ষায় উত্তর দিনাজপুর জেলাকে ভাসায়। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে কুলিক নদী ফুঁসে ওঠায় জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। মহানন্দার জলে ইটাহারের একাংশ জলমগ্ন হয়েছে। ভারী বর্ষণের জেরে খোদ জেলা সদর রায়গঞ্জ শহরের একাধিক ওয়ার্ড জলমগ্ন গত কয়েকদিন ধরে জলমগ্ন রয়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, কুলিক নদী ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করায় রায়গঞ্জ শহর সংলগ্ন আব্দুলঘাটা, বাহিন, গৌরী গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা জল থইথই করছে। চাকুলিয়া ও কালিয়াগঞ্জ ব্লকের একাংশও প্লাবিত হয়েছে। নদী তীরবর্তী গ্রামগুলিতে এক বুক সমান জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। গ্রামবাসীরা ঘরবাড়ি ছেড়ে বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকে বাঁধের উপর ত্রিপল টাঙিয়ে দিনযাপন করছেন। প্লাবিত এলাকায় পানীয় জল না মেলায় বাসিন্দারা ব্যাপক সমস্যায় পড়েছেন। এসব এলাকার বেশিরভাগ নলকূপ জলের তলায় চলে গিয়েছে। অভিযোগ, গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্তারা চাল, চিড়ে নিয়ে হাজির হলেও পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা করছেন না।
রায়গঞ্জ শহর সংলগ্ন দক্ষিণ আব্দুলঘাটায় গত ন’দিন ধরে নদী বাঁধে ত্রিপল টাঙিয়ে ৬০টি পরিবার রয়েছে। পুরো গ্রামটিই এখন জলের তলায়। পেশায় ভ্যান চালক ঝুমনারায়ণ বর্মন বলেন, পানীয় জল মিলছে না। ছোট ছোট বাচ্চারা জল চাইলে, সময়ে দিতে পারছি না। তাছাড়া ত্রিপলও মিলছে না। পুরনো ত্রিপল জোড়াতালি দিয়ে তাঁবু টাঙিয়েছি। একটা তাঁবুর মধ্যে পরিবারের ছয় জন গাদাগাদি হয়ে থাকছি। আরেক দুর্গত বলেন, পঞ্চায়েত থেকে যতগুলি ত্রিপল এসেছিল তার থেকে পরিবারের সংখ্যা অনেক বেশি। ফলে অনেকেই ত্রিপল পাননি।
এদিকে কুলিক নদীতে স্রোত কমার লক্ষ্মণ নেই। বরং যতই দিন যাচ্ছে, ততই নদীর প্লাবন ছাপিয়ে যাচ্ছে এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে। দুর্গতদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। কুলিক নদীর উৎসস্থল বাংলাদেশে। ওপার বাংলার বর্ষা নদীর স্রোত বৃদ্ধি করে। ফলে কবে এই বিপর্যস্ত জনজীবন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে তার সদুত্তর দিতে পারছেন না সেচদপ্তরের কর্তারাও। উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের সেচদপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন বলেন, সর্বত্র পর্যাপ্ত ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে। বেশ কয়েকটি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। স্কুলঘর, সরকারি ভবন, নদী বাঁধে দুর্গতরা আশ্রয় নিয়েছেন। বাঁধে থাকা সকলকেই ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। পানীয় জলের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। সেচদপ্তরের কর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলা চলছে। বৃষ্টি থামলেই বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।