বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বর্ষার মরশুম শুরু হলেও উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে আতঙ্ক বাড়ে। দিন কয়েকের নাগাড়ে বৃষ্টিতেই তিস্তা, করলা ফুলেফেঁপে উঠেছে। সিকিম আবহাওয়া দপ্তরের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, আগামী রবিবার পর্যন্ত জলপাইগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী বর্ষণের সতর্কতা রয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় জলপাইগুড়িতে ৪৫.৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জল বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে তিস্তা ও করলা নদীতে। ফলে অসংরক্ষিত এলাকাগুলিতে জল ঢুকে পড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। সেচ দপ্তরের জেলার এক আধিকারিক বলেন, আমরা প্রাক্বর্ষার শুরু থেকে বাঁধ মেরামতির কাজে জোর দিয়েছি। কোথাও এখনও সেইরকম কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর আসেনি। নদী সংলগ্ন নিচু জায়গার বাসিন্দাদের তালিকাও প্রস্তুত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের কাছে সেই তালিকা পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে অনেক নতুন বাঁধ তৈরি করা হয়েছে। সেচ দপ্তরের পাশাপাশি বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরও যেকোনও রকম পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে। শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বিজয়চন্দ্র বর্মন বলেন, আমরা এ বিষয়ে আগেই প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা করেছি। সেইমতো ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। উদ্ধার ও ত্রাণের জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি। জলপাইগুড়ি জেলায় দু’টি সরকারি ত্রাণ কেন্দ্র রয়েছে।
এদিকে কোচবিহারে বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত ব্যাপক বজ্রপাত হয়। গভীর রাতে ঘনঘন বাজ পড়ার শব্দে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। অনেকেরই জেগে থাকেন। গত ২৪ ঘণ্টায় কোচবিহারে ৭৯.২, দিনহাটায় ১১৩.৬, মাথাভাঙায় ১৬৯.২, পাড়ডুবিতে ৩৭৩.৭, মেখলিগঞ্জে ১৫৫.৬, হলদিবাড়িতে ১০৮.৬ এবং সিতাইতে ৪২.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ভোররাত থেকে টানা বৃষ্টিতে মাথাভাঙা মহকুমার ধরলা, মানসাই, সুটুঙ্গা নদীর বেশকিছু এলাকায় ভাঙন শুরু হয়।
আলিপুরদুয়ারের জয়ন্তী নদীর বাঁধও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হাউরি, বাংরি, তিতি নদীর জলোচ্ছ্বাসে মাদারিহাট-টোটোপাড়া ২২ কিমি রাজ্য সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টোটোপাড়া বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। চর তোর্সা নদীর জলের তোড়ে ফালাকাটা ঢোকার মুখে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে চর তোর্সার ডাইভারশন সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ভারী যানবাহন সোনাপুর দিয়ে কোচবিহারের পুণ্ডিবাড়ি হয়ে যাতায়াত করছে। সেচ দপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় আলিপুরদুয়ারে ৩০৫.৬০ ও হাসিমারায় ১৫৭.৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। কালজানি, রায়ডাক, সংকোশ, বাসরা, তোর্সা, পানা, মুজনাই, কলি, ডিমা ও গরম সহ জেলার সমস্ত ছোটবড় নদীতেই জলস্তর বেড়েছে।