পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
মদন, প্রদীপ, আনসারুল—এরা সবাই ভিন রাজ্য ফেরত। কাজের খোঁজে, বেশি টাকা উপার্জনের আশায় কেউ গিয়েছিলেন মহারাষ্ট্র কেউবা আবার গুজরাতে। কিন্তু করোনার থাবায় সবকিছু উলট পালট হয়ে গেল। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে বাড়ি ফিরেও নিজের ঘরে জায়গা হল না। থাকতে হল সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে। তবে নির্ধারিত সময় কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে কাটানোর পর তাঁরা ছাড়া পেয়েছেন। স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে। সেখানেও সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি। এদিকে দীর্ঘদিন ঘরে বসে থেকে সঞ্চিত অর্থ শেষ। তাই সেন্টার থেকে বেরিয়ে নিজের জেলাতেই কাজের সন্ধান শুরু করে দেন তাঁরা। কেউ কেউ ধান কাটার কাজ শুরু করেছেন। আর বেশিরভাগই হাত লাগিয়েছেন আম পাড়ার কাজে। সেই কাজটাই এখন জেলায় সহজে মিলছে।
সামসি মহেশপুরের বাসিন্দা আনসারুল হক ফিরে এসেছেন গুজরাত থেকে। তিনি বলেন, আমি বাইরের রাজ্যে কাজ করতে যাই। কারণ, আমাদের এখানে তেমন কাজ নেই। আর যে সমস্ত কাজ রয়েছে, সেই কাজ করে সংসার চালানো অসম্ভব। তবে এবার যে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি, তাতে বাইরে কাজে যাওয়ার আর ইচ্ছা নেই। ফিরে এসে কোয়ারেন্টাইনে ছিলাম। এখন আমাদের ছেড়ে দিয়েছে। তাই এখন আম ভাঙার কাজ করব। ইতিমধ্যে অনেক বাগান মালিকের সঙ্গে কথাও বলে রেখেছি।
মানিকচকের নাজিরপুরের বাসিন্দা প্রদীপ মণ্ডল ফিরেছেন মহারাষ্ট্র থেকে। তিনি বলেন, আর বাইরে কাজে যাব না। আমি তো ইতিমধ্যে আম ভাঙার কাজ শুরু করেছি। আশা করছি, আগামী সপ্তাহ থেকে আরও বেশি কাজ পাব। এ কাজ ঠিকভাবে করতে পারলে প্রতিদিন ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা করে উপার্জন হবে।
রতুয়ার এক আমবাগানের মালিক খিদমত মিঁয়া বলেন, লকডাউনের জন্য আমরা খুব চিন্তিত ছিলাম। কারণ, এবার আম পাড়ার শ্রমিক মিলবে কি না, তা বুঝতে পারছিলাম না। কিন্তু বাইরে থেকে আমাদের জেলার যে সমস্ত শ্রমিক ঘরে ফিরছেন, তারাই এখন আম পাড়ার কাজ করতে চাইছেন। তাই আর সমস্যা হবে না। বাইরের রাজ্য থেকে শ্রমিক না আসার ঘাটতি পূরণ করবে আমাদের নিজের জেলার শ্রমিকরাই। মানিকচক ব্লকের নাজিরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিজেপির পম্পা সরকার বলেন, আমাদের অঞ্চলের যে সমস্ত শ্রমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থেকে ঘরে ফিরেছেন, তাঁদের আমরা সাবধানে থাকতে বলেছি। আর তাঁদের যেন কোনও সমস্যা না হয়, সেজন্য প্রচার করছি। যাঁদের জব কার্ড আছে, তাঁদের আমরা ১০০ দিনের কাজে খুব শীঘ্রই নিযুক্ত করব। এতে তারা অনেকটাই উপকৃত হবেন। আবার অনেকেই এর মধ্যে ধান কাটা বা আম ভাঙার কাজ করছেন। সবাই যেন সতর্ক হয়ে মাস্ক পরে কাজ করেন।