বিদ্যার্থীদের উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে মধ্যম ফল আশা করা যায়, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। ব্যবসাতে যুক্ত ... বিশদ
এদিকে, গোরুর গুঁতোর ঘটনার পর ১০ দিন কেটে গিয়েছে। তারপরেও অত্যন্ত ঝুঁকি ও সাহসিকতার সঙ্গে কোচবিহারের বক্সিরহাট ব্লকের জোড়াইয়ের বাসিন্দা ওই বধূর মাথায় এই জটিল অপারেশন করে নজির গড়লেন আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা। অপারেশনের পরে জ্যোৎস্না ঘোষ নামে ৩৮ বছরের ওই বধূ এখন ধীরে ধীরে সাড়া দিচ্ছেন। বর্তমানে জ্যোৎস্নাদেবীকে জেলা হাসপাতালের সিসিইউতে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার ওই বধূর অপারেশন হয়। আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের সুপার চিন্ময় বর্মনের নেতৃত্বে হাসপাতালের তিন সদস্যের একটি চিকিৎসক দল জ্যোৎস্নাদেবীর এই জটিল অপারেশন করে। চিন্ময়বাবু ছাড়াও অপারেশনে ছিলেন জেলা হাসপাতালের অন্য দুই জেনারেল সার্জন চিকিৎসক দিলীপ পাল ও শ্যামসুন্দর সরকার। জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়িতে জ্যোৎস্নাদেবীর মাথায় গোরু গুঁতো মারে। এরপর থেকেই ওই বধূর মাথায় যন্ত্রণা হতে থাকে। মাঝেই মাঝেই মাথা ঝিম ঝিম করত। বেশ কয়েকবার তিনি বমিও করেন। ওই ঘটনার আট দিন পর বধূকে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে মহিলার মাথায় সিটি স্ক্যান করা হয়। তাতে দেখা যায়, মাথায় রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে। এরপরেই জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন নিউরো সার্জারি ও বারহোল ক্রেনিওটমির যন্ত্রপাতি ছাড়া ওই রক্ত বের করা সম্ভব নয়। যার কোনওটাই জেলা হাসপাতালে নেই। সেজন্য হাসপাতালের চিকিৎসকরা মহিলার পরিবারকে রোগীকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু হতদরিদ্র জ্যোৎস্নাদেবীর পরিবারের পক্ষে এই লকডাউনের মধ্যে বাইরে নিয়ে যাওয়া ও প্রচুর টাকা খরচ করে এই অপারেশন করা সম্ভব ছিল না। সেজন্য জ্যোৎস্নাদেবীর পরিবার চিকিৎসকদের কাছে কাতর অনুরোধ করে জানায় যা করার এই হাসপাতালেই যেন করা হয়।
এরপরেই জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয় পরিবারের সম্মতি নিয়ে এখানেই জ্যোৎস্নাদেবীর অপারেশন করা হবে। কিন্তু, বারহোল ক্রেনিওটমির যন্ত্র কোথায় পাওয়া যাবে? উপায় বের করেন দিলীপবাবু। তিনি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর এক চিকিৎসক বন্ধুর কাছ থেকে বারহোল ক্রেনিওটমি যন্ত্র নিয়ে আসেন। তারপরেই গত মঙ্গলবার জ্যোৎস্নাদেবীর অপারেশন হয়। জেলা হাসপাতালের সুপার চিন্ময়বাবু বলেন, আলিপুরদুয়ার তো বটেই, সরকারি কোনও জেলা হাসপাতালেই এই ধরনের জটিল অপারেশনের ব্যবস্থা নেই। আমরা ঝুঁকি নিয়ে মহিলার মাথার এই অপারেশন করেছি। অপারেশনের পর সিসিইউতে থাকা জ্যোৎস্নাদেবী ধীরে ধীরে চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন। আমরা আশাবাদী, তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাবেন।