বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে চাষিদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। একদিকে ভালো বাজার না পাওয়া অন্যদিকে বাধ্য হয়ে অর্ধেক দামে গুঁটি বিক্রি করা দেওয়ায় রেশম শিল্পে বড় ক্ষতির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। মালদহে আমের পরেই রয়েছে রেশম শিল্প। তার মধ্যে চাঁচলে সবচেয়ে বেশি রেশম উৎপাদন হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বাজারে ভালো দাম না মেলায় চাষিরা সমস্যায় পড়েছেন। অনেকে অভাবি বিক্রিতে বাধ্য হচ্ছেন।
এবিষয়ে রেশম চাষিরা বলেন, চড়া দামে ডিম কিনে তা থেকে গুঁটি তৈরি অনেক পরিশ্রম ও খরচ সাপেক্ষ। গুঁটি তৈরি হলেও বাজারজাত করা যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে বাড়িতেই গুঁটি ফেলে রাখতে হয়েছে। কিছু ফড়ে গ্রামে ঘুরে ঘুরে অর্ধেক দামে রেশম কিনছে। তাতে আমাদের কোনও লাভ থাকছে না। চাঁচলের এক রেশম চাষি শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, এবার রেশমের বাজার মোটেও ভালো নয়। লকডাউনে বাইরে থেকে কোনও গ্রাহক বা ব্যবসায়ী আসতে পারেননি। আমরাও বাজার ধরতে পারিনি। যেকারণে রেশম গুঁটি বাড়িতেই নষ্ট হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিক্রির চেষ্টা করব। তবে অনেকেই দেখছি অর্ধেক দামে রেশম ফড়েদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন। সংরক্ষণ করার জায়গা না থাকায় বাধ্য হয়ে তাঁরা বিক্রি করে দিচ্ছেন। বিষয়টি আমরা সংশ্লিষ্ট সেরিকালচার অফিসে জানিয়েছি।
এবিষয়ে চাঁচল সেরিকালচার বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক বলেন, লকডাউনের কারণে রেশম চাষিরা গুঁটি বিক্রি করতে পারেননি। এটা অস্বীকার করার জায়গা নেই। চাষিরা কালিয়াচকের বাজারের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু সেখানেও বাইরে এবার ব্যবসায়ীরা আসেননি। যেকারণে রেশম চাষিরা প্রচুর লোকসানে পড়েছেন। আমাদের বিষয়টি তাঁরা জানিয়েছেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে এধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে। লকডাউন উঠে গিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যেতে পারে।
সেরিকালচার দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, চাঁচলে ৩০০০ রেশম চাষি রয়েছেন। তারা ডিম ফুটিয়ে পলু পোকা থেকে গুঁটি তৈরি করেন। সেগুলি চড়া দরে বিক্রি হয়। মালদহ সহ নদীয়া জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসে গুঁটি কিনে নিয়ে যান। তবে লকডাউনের কারণে এবছর রেশম চাষিরা উৎপাদিত গুঁটি বিক্রি করতে পারেননি। তাই ঘরে ঘরে রেশম গুঁটি পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। এতে চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ৪ঝ কেজি রেশম গুঁটির মূল্য প্রায় ৮০০০ টাকা। সেই গুঁটি বাজারজাত করতে না পারায় অনেকে ফড়েদের কাছে তা ৪০০০ টাকায় বিক্রি করছেন। যে কারণে এবার রেশম চাষিরা উৎপাদিত রেশম থেকে লাভের আশা ছেড়ে দিয়েছেন।