বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
এব্যাপারে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমএসভিপি ডাঃ অমিত দাঁ বলেন, অন্যান্য সময়ের তুলনায় লকডাউনে আউটডোরে ৪০ শতাংশ রোগী কম ছিল। তবে হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা স্বাভাবিক সময়ের মতোই সচল ছিল। উল্লেখ্য, এমনিতে মালদহ মেডিক্যালের আউটডোরে প্রতিদিন কয়েক হাজার রোগী চিকিৎসার জন্য আসেন। মালদহের পাশাপাশি লাগোয়া মুর্শিদাবাদ, দুই দিনাজপুর, বিহার, ঝাড়খণ্ডের বহু রোগীও মেডিক্যালের আউটডোরে প্রতিদিন ভিড় জমান। সাধারণ জ্বর সর্দির পাশাপাশি বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে রোগীরা আসেন। মেডিক্যালের নবনির্মিত বহুতল ভবনে আউটডোর চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট বিভাগে গিয়ে রোগীরা চিকিৎসা করান। রোগ নির্ণয়ের জন্য সেখানে নানা পরীক্ষা নিরীক্ষাও করা হয়।
মানিকচকের বাসিন্দা শেখ রহিম বলেন, গত এক বছর ধরে হাসপাতালের আউটডোরে আমার হাঁপানির চিকিৎসা চলছে। প্রায় প্রতি মাসেই চিকিৎসকের কাছে যেতে হয়। গত দু’মাস বাস চলেনি। ফলে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যেতে পারিনি। রতুয়ার বাসিন্দা স্বপন মণ্ডল বলেন, শিরদাঁড়ার ব্যাথায় গত এক মাস ধরে আমি কার্যত হাঁটাচলা করতে পারছি না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এতদিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হয়ে যেত। কিন্তু করোনার আতঙ্কে বাড়ি থেকে বের হতেই ভয় লাগছে। হাসপাতালে যাওয়ার কথা ভাবলেও মনে আশঙ্কা দানা বাঁধছে। ফলে বাড়িতেই রয়েছি।
এদিকে করোনা আতঙ্কের জেরে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হতেই চাইছেন না সাধারণ মানুষ। উত্তর দিনাজপুর জেলার সর্ববৃহৎ সরকারি এই চিকিৎসা পরিষেবা কেন্দ্রে এখন ৫০ শতাংশ শয্যাও পূরণ হচ্ছে না রোগীর অভাবে। অথচ বিগত দিনে এই সময়ে অন্যরকম চিত্র দেখা যায় মেডিক্যাল কলেজে। শয্যার অভাবে হাসপাতালের মেঝেতে জায়গা করে নিতে হতো রোগীদের। কিন্তু এখন চিত্রটা পুরোপুরি উল্টো। সারি সারি বেড ফাঁকা পড়ে রয়েছে দশতলা বিশিষ্ট এই প্রকান্ড ভবনে। আউটডোরেও রোগীদের সংখ্যা নিতান্তই কম।
রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার অভীক মাইতি বলেন, উত্তর দিনাজপুর জেলায় পরিযায়ী শ্রমিকদের আসার পর থেকেই করোনা পজিটিভের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ফলে সাধারণ মানুষ অত্যন্ত ভয় রয়েছেন। খুব প্রয়োজন না হলে হাসপাতালে আসতে চাইছেন না। এলেও চিকিৎসকদের সঙ্গে
দেখা করেই ফের বাড়িতে চলে যেতে চাইছেন। চিকিৎসকেরা রোগীকে প্রয়োজন হলেও হাসপাতালে ভর্তি করানোর ব্যাপারে রাজি করাতে পারছেন না।
সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এই হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা ৪৯৩। সে তুলনায় রোগীর সংখ্যা এখন অনেকটাই কম।
রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল খুব বেশি হলে মাত্র একশোটি বেডে রোগী ভর্তি রয়েছে। বাদবাকি শয্যা সারি সারি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগী ও তাদের আত্মীয়রা বলেন, হাসপাতালে ভর্তি হতে ভয় পাচ্ছে সবাই। ভিন রাজ্য থেকে শ্রমিকরা জেলায় আসার পর থেকেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। তাই হাসপাতালে নয়, চিকিৎসকদের চেম্বারে উপরে ভরসা করছি। নিরুপায় হলে তবেই সাধারণ মানুষ হাসপাতালে আসছেন।