পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
পরপর এত কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট আসায় স্বাভাবিকভাবেই জেলাজুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর ও প্রশাসন করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় সব রকমের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তারা মানুষকে ভীত না হয়ে স্বাস্থ্যবিধিগুলি সঠিকভাবে মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে। তাদের মতে, এই পরিস্থিতিতে মানুষ সতর্ক হলেই করোনার বিরুদ্ধে জয়ী হওয়া সম্ভব। অন্যদিকে, কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ট্রুন্যাট মেশিনে নমুনা পরীক্ষার কাজও দ্রুত শুরু হবে বলে স্বাস্থ্য প্রশাসন জানিয়েছে। সোমবার সকালে জেলায় আরও ৮৮৬টি নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট এসে পৌঁছয়। সেগুলি সবই নেগেটিভ এসেছে বলে স্বাস্থ্যদপ্তর জানিয়েছে।
কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদিয়ান বলেন, জেলায় এপর্যন্ত ৫১টি জায়গাকে কন্টেইমেন্ট জোন করা হয়েছে। এসব জায়গায় সরকারি নিয়ম অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ বিশ্বজিৎ রায় বলেন, আমরা প্রথম থেকেই পরিকল্পনা করে কাজ করছি। জেলায় করোনা আক্রান্তরা সকলেই উপসর্গ বিহীন এবং ভিনরাজ্য থেকে এসেছেন। এরা প্রত্যেকেই কঠোর পরিশ্রমী ও গড় বয়স ৩৫। সেক্ষেত্রে আগে থেকেই তাঁদের মধ্যে ইমিউনিটি রয়েছে। এতদিন তাঁরা প্রাতিষ্ঠানিক অথবা হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। অনেকেই ইতিমধ্যে কোয়ারেন্টাইনের সময়কাল অতিক্রম করেছেন। তাই তাঁদের দ্বারা সংত্রুমণের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কিন্তু এখনও ভিনরাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা আসছেন। আমরা তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি। পরীক্ষার জন্য সোয়াবও সংগ্রহ করা হচ্ছে। এখন প্রয়োজন সচেতনতা। প্রত্যেকেই যদি স্বাস্থ্যবিধিগুলি মেনে চলেন, সতর্ক থাকেন তাহলে আমরা এই অদৃশ্য দানবকে প্রতিহত করতে পারব। আমরা আশা করি আমরা যেভাবে এগোচ্ছি তাতে সাধারণ মানুষ সহযোগিতা করলে আমরা এই যুদ্ধে জয়ী হব।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দিনহাটা-১ এবং ২, সিতাই, মাথাভাঙা, তুফানগঞ্জ ও কোচবিহার সদরের নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গাকে কন্টেইমেন্ট জোন করা হয়েছে। এসব জায়গায় প্রশাসন ও স্বাস্থ্যদপ্তরের পক্ষ থেকে নজরদারি চালানো হচ্ছে। রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর প্রায় দু’মাস কোচবিহার জেলায় কার্যত কোভিড পজিটিভের খোঁজ মেলেনি। স্বাস্থ্যদপ্তর প্রথম থেকেই নমুনা সংগ্রহে জোর দিয়ে বিপুল পরিমাণ নমুনা পরীক্ষার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পাঠিয়েছে। কিন্তু কোনও পজিটিভ কেস পাওয়া যায়নি। সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু ভিনরাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা ফেরার পর একসঙ্গে ৩২ জনের পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এরপর আরও নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন, পুলিস ও স্বাস্থ্যদপ্তর। এরপর আরও ৩৭ এবং ১৮ জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এর ফলেই জেলাজুড়ে উদ্বেগ ছড়িয়েছে।
এদিকে, জেলায় এখনও প্রচুর মানুষ কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রয়েছেন। সেখান থেকে ক্রমান্বয়ে নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হচ্ছে। এখনও বেশকিছু রিপার্ট জেলায় আসা বাকি রয়েছে। সেই সমস্ত রিপোর্টে আরও কোভিড পজিটিভের সন্ধান পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী দিনে জেলায় আরও বিপুল সংখ্যক শ্রমিক আসার কথা রয়েছে। তাঁরা এসে পৌঁছলে পরিস্থিতি কী আকার নেবে তা নিয়েও চিন্তায় রয়েছে প্রশাসন।