কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
মহদিপুর এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি মহম্মদ ফজলুল হক বাংলাদেশের সোনা মসজিদ আমদানি ও রপ্তানি সংগঠনের সভাপতি ও সম্পাদককে ৩১ মে একটি লিখিত বার্তা পাঠান। ওই চিঠিতে তিনি স্পষ্ট উল্লেখ করেন, কেন্দ্রীর সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২ জুন থেকে মহদিপুর আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে রপ্তানি শুরু করা হবে। করোনা সংক্রমণ রুখতে বিভিন্ন সময়ে কেন্দ্রীয় সরকারের জারি করা সামাজিক দূরত্ব ও অন্যান্য নিরাপত্তাবিধি মেনেই এই রপ্তানি শুরু হবে বলে ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
মহদিপুর ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ভূপতি মণ্ডল বলেন, ৭০ দিন ধরে বাংলাদেশে রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। বিপুল আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছেন রপ্তানি বাণিজ্যের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। কেন্দ্রীয় সরকার পরিস্কার করে জানিয়ে দিয়েছে, আন্তর্জাতিক রপ্তানি চালু করার ক্ষেত্রে কোনও আপত্তি নেই। বিষয়টি নিয়ে আমরা একাধিকবার জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি। রাজ্য সরকারকেও লিখিতভাবে আমাদের জীবন-মরণ সমস্যার কথা জানিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ১২ মে রাজ্যের স্থলবন্দরগুলি দিয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য শুরু করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এই বিষয়ে লিখিত কোনও সম্মতিপত্র আমরা পাইনি। সুতরাং আর অপেক্ষা না করে বাংলাদেশে আমরা রপ্তানি চালু করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
রপ্তানিকারকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রথম দিন প্রায় ২০০টি লরি করে আদা, পেঁয়াজ, ফল সহ নির্দিষ্ট কিছু আনাজ, ফল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বাংলাদেশে পাঠানো হবে। বাংলাদেশের আমদানিকারকরা এপ্রিল মাসের চতুর্থ সপ্তাহ থেকেই এই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চালু করার আবেদন জানিয়ে আসছেন বলেও জানিয়েছেন ভারতীয় আমদানিকারকরা। তাঁদের দাবি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্য সরকারের ভূমিকা সহযোগীর। কেন্দ্রীয় সরকার অনুমতি দিয়েছে বলেই এই রপ্তানি চালু করা হচ্ছে। রপ্তানিকারকদের আশা, রাজ্য সরকারও রপ্তানি চালু হওয়ার পরে তাঁদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবেন।
এই প্রসঙ্গে সোমবার বিকালে জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, মহদিপুর দিয়ে রপ্তানি বাণিজ্য আরম্ভ হওয়ার বিষয়টি জানা নেই। রপ্তানিকারকদের সঙ্গে আলোচনা হলে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে পারব।
উল্লেখ্য, মালদহের মহদিপুর সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৩২৫টি লরি বাংলাদেশে বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে যায়। শুক্রবার বাদে সপ্তাহে ছয়দিন এই রপ্তানি হয়ে থাকে। একদিন রপ্তানি বন্ধ থাকলে প্রায় ২৪ লক্ষ ৪৫ হাজার আমেরিকান ডলার লোকসান হয়। ভারতীয় মুদ্রায় এই ক্ষতির পরিমাণ একদিনে প্রায় ১৮ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকা। রপ্তানি ৬০ দিন বন্ধ থাকায় ১১০০ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি রপ্তানিকারকদের।
ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে রপ্তানি বন্ধ থাকার ফলে আমদানিকারকরা একের পর এক অর্ডার বাতিল করেছেন। পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রেই ক্ষতিপূরণও দাবি করছেন। অন্যদিকে, ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া ঋণ শোধ করতে নাভিশ্বাস উঠছে রপ্তানিকারকদের। তাঁদের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত লরি চালক, সহায়ক, শ্রমিক সহ অনেককেই রপ্তানি অবিলম্বে চালু না হলে কাজ হারাতে হতে পারে।
এক রপ্তানিকারক বলেন, এখন লকডাউন অনেকটা শিথিল করা হয়েছে। সব বাণিজ্যই চালু হয়ে গিয়েছে। তাই সুরক্ষা বিধি মেনে রপ্তানি বাণিজ্যও চালু হলে কয়েক হাজার পরিবার বেঁচে যাবে।