গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
শিলিগুড়ি সহ দার্জিলিং জেলায় করোনার প্রকোপ বাড়ছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, গত ২৪ মে নকশালবাড়ির উত্তর স্টেশন পাড়ার এক কিশোর জ্বর, সর্দি ও কাশি নিয়ে শিলিগুড়ির সারি হাসপাতালে ভর্তি হয়। এরপরের দিন অর্থাৎ ২৫ মে সারি হাসপাতালে ভর্তি হন বাগডোগরার এক যুবক। এদিন তাদের সোয়াব টেস্টের রিপোর্টে করোনা পজেটিভ মিলেছে। এছাড়া একজন গর্ভবতী মহিলা, এক বিএসএফ জওয়ান, কোভিড হাসপাতালের এক ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান ও এক শিশু করোনা আক্রান্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ল্যাব টেকনিশিয়ান ও শিশুর বাড়ি জলপাইগুড়ি জেলার অধীনে।
দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক এস পুন্নমবালম বলেন, করোনা আক্রান্ত ওই রোগীদের কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের চিকিৎসা শুরু হয়েছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, নকশালবাড়ির কিশোরের ও বাগডোগরার গর্ভবতী মহিলার ট্রাভেল হিস্ট্রি নেই। বিভিন্ন সময় তাঁরা চিকিৎসার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। সেখান থেকে তাঁরা সংক্রামিত হয়েছেন বলে অনেকের আশঙ্কা। এরবাইরে ফাঁসিদেওয়ার যুবক কর্মসূত্রে পুনেতে গিয়েছিলেন। ২৫ মে তিনি এখানে আসেন। আর কোভিডের ল্যাব টেকনিশিয়ন নকশালবাড়ি ও শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। গত ২১ মে তিনি কোভিডে যান। কাজেই, কোভিডে যোগ দেওয়ার আগেই তিনি সংক্রামিত হয়েছেন বলে আশঙ্কা। আর ওই শিশুও করোনা আক্রান্ত এক রোগীর সংস্পর্শে এসে সংক্রামিত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
উত্তরবঙ্গে করোনা মোকাবিলায় নিযুক্ত ওএসডি ডাঃ সুশান্তকুমার রায় বলেন, সমগ্র বিষয় নিয়ে দার্জিলিং জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের সঙ্গে কথা হয়েছে। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট ওই রোগীদের সংস্পর্শে আসা প্রায় ২১ জনকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, এ নিয়ে দার্জিলিং জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৬ জন। একজনের মৃত্যু হয়েছে। বেশ কয়েকজন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
অন্যদিকে, শিলিগুড়ির কোভিড হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ রীতিমতো ক্ষুব্ধ। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবর, ১০০ বেড বিশিষ্ট এই হাসপাতালে বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন ৫৯ জন। এরমধ্যে কোচবিহারের ৩২ জন, আলিপুরদুয়ার জেলার পাঁচজন, মালদহের একজন, দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলার ২১ জন রয়েছেন। রোগীর এই চাপ সামাল দিতে গিয়ে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা হিমশিম খাচ্ছেন। পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে জেলার বিভিন্ন ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র (বিপিএইচসি) থেকে চিকিৎসকদের তুলে কোভিডে আনতে হচ্ছে। ফলে বিপিএইচসিগুলির চিকিৎসা পরিষেবা মার খাচ্ছে বলে অভিযোগ।
ক্ষুব্ধ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, দীর্ঘ দু’মাস ধরে জেলাগুলিকে সতর্ক করা হলেও কোভিড হাসপাতালের পরিকাঠামো চাঙ্গা করেনি। এখন তারা হাত তুলে দিয়ে শিলিগুড়ি কোভিড হাসপাতালের উপর ভরসা করছে। এটা মানা যায় না। জেলাগুলিতে কোভিড হাসপাতাল চালু করতে হবে। স্বাস্থ্য দপ্তর ও জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
এদিকে, শিলিগুড়ি কোভিড হাসপাতালের বেড বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এদিন এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা বৈঠক করেন। পরে ওএসডি বলেন, পরিস্থিতির সামাল দিতে কোভিড হাসপাতালের বেড সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।