সংবাদদাতা, গাজোল: বৃহস্পতিবারই কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থেকে ছেড়ে দিয়েছে প্রশাসন, কিন্তু প্রতিবেশীদের আপত্তিতে বাড়ি ফিরতে পারছেন না পরিযায়ী শ্রমিকরা। ফলে গত দু’দিন ধরে সেই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারেই মাথা গুঁজে থাকতে হচ্ছে। যেহেতু তাঁদের বাড়ি চলে যেতে বলা হয়েছে, তাই আর খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়নি। অতএব, সেন্টারে দিন কাটছে না খেয়েই। সব মিলিয়ে ব্যাপক সমস্যায় পড়েছেন গাজোল ব্লকের করকচ গ্রাম পঞ্চায়েতের আমচল হাই স্কুলের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে থাকা প্রায় ৫০ জন পরিযায়ী শ্রমিক। সেন্টারে থাকা শ্রমিকদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শনিবার পযর্ন্ত তাঁদের কোনও খাবার জোটেনি।
করকচ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ফুলমণি হাঁসদা বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরেও ওই সেন্টারে থাকা প্রায় ৫০ জন শ্রমিককে খাবার দেওয়া হয়েছে। অনেক দিন পরিয়ায়ী শ্রমিকদের আমরা খেতে দিলাম। কিন্তু আর পারছি না। আর কতদিন এভাবে চলবে? এত আর্থিক ক্ষমতা পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের ঩নেই। তাই আমরা ওই শ্রমিকদের অনুরোধ করে বলেছি যাতে অন্য কোথাও থেকে বা বাড়ি থেকে খাবারের ব্যবস্থা করে নেন তাঁরা।
গাজোলের জয়েন্ট বিডিও সন্দীপন দে বলেন, আমার কাছে এই রকম কোনও রিপোর্ট আসেনি। যতদূর জানি ওখানে কোনও সমস্যা হচ্ছে না। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
আমচল হাই স্কুলে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে থাকা পরিযায়ী শ্রমিক অনিল বর্মন, গৌর বর্মনরা বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে শেষ ভাত খেতে দেওয়া হয়েছিল। তারপর সেদিন বিকেলের পর থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে কিছু খেতে দেয়নি। ওরা বলে গিয়েছে, বাড়ি চলে যাও। এখানে আর দেখাশোনার কেউ থাকবে না। আর এখানে থাকলে বাড়ি থেকে কাউকে দিয়ে খাবার আনিয়ে খেতে হবে। কিন্তু নানা কারণে আমরা গ্রামে ঢুকতে পারছি না। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে আমরা এখানে রয়েছি। এই পরিস্থিতিতে আমাদের দাবি, আরও যে কয়েকটা দিন থাকব, সরকার থেকে আমাদের জন্য খাবার ব্যবস্থা করে দিক প্রশাসন। তাহলে খুব ভালো হবে।
প্রসঙ্গত, পরিযায়ী শ্রমিকরা মালদহে ফেরতে শুরু করতেই জেলায় হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। বর্তমানে জেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা দেড়শোর কাছাকাছি। এই পরিস্থিতিতে জেলায় ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তাঁরা বাড়ি ফিরতে চাইলেও তাঁদের এলাকায় ঢুকতে দিচ্ছেন না গ্রামবাসীরা।