সংবাদদাতা, দিনহাটা: করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে এবার আইসোলেশন ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নিল কোচবিহার জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর। জুন মাসের মধ্যেই ১৫-২০টি বেডের আইসোলেশন ওয়ার্ড করা হবে। বর্তমানে মহকুমা হাসপাতালে যে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারটি রয়েছে সেটাকেই প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি দিয়ে সাজিয়ে আধুনিক ওই ওয়ার্ড করা হবে। সেজন্য এখন নতুন করে হাসপাতালের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে কাউকে রাখা হচ্ছে না। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন সেখানে চারজনকে রাখা হয়েছে। তাঁদের ১৪ দিন হয়ে গেলে ছেড়ে দেওয়া হবে। তারপরেই পুরো সেন্টারটিকে স্যানিটাইজ করে আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরির কাজে হাত দেওয়া হবে।
দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালের সুপার রণজিৎ মণ্ডল বলেন, এখন দিনহাটায় অনেক কোয়ারেন্টাইন সেন্টার হয়েছে। সেইজন্য জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশ মেনে আমাদের হাসপাতালের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে আইসোলেশন ওয়ার্ড গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আপাতত ১৫-২০ বেডের আইসোলেশন ওয়ার্ড গড়ার চেষ্টা চলেছে। রোগীদের পাশাপাশি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স সহ অন্যান্য কর্মীদের মধ্যে কারও জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাঁরাও এখানে থাকতে পারবেন।
দিনহাটা নাগরিক মঞ্চের সম্পাদক জয় গোপাল ভৌমিক বলেন, রোজ বাইরের রাজ্য থেকে প্রচুর শ্রমিক দিনহাটায় ফিরছেন। আমাদের মহকুমায় প্রশাসন আনেকগুলি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরি করেছে। সেখানে তাঁদের রাখা হচ্ছে। কিন্তু দিনহাটায় একটিও আইসোলেশন ওয়ার্ড নেই। মহকুমা হাসপাতালে এটা তৈরির উদ্যোগ স্বাস্থ্য দপ্তর নেওয়ায় খুব ভালো হল।
করোনা সংক্রমণ ঠেকেতে লকডাউন শুরু হওয়ার পর দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালের একটি নতুন ফাঁকা বিল্ডিংয়ে ২৫টি বেডের কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরি করা হয়। বাইরের রাজ্য থেকে দিনহাটায় ফেরা পরিযায়ী শ্রমিক সহ অন্যান্যদের ১৪ দিন ওই সেন্টারে রাখা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে দিনহাটা মহকুমার তিনটি ব্লক ও পুরসভা এলাকায় অনেকগুলি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছে। সেইজন্য স্বাস্থ্য দপ্তর দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে থাকা ওই সেন্টারটিকে আইসোলেশন সেন্টার করতে যাচ্ছে।
দিনহাটা মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দিনহাটা মহকুমায় মোট ২৪টি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করা হয়েছে। এরমধ্যে দিনহাটা-২ ব্লকে ন’টি, দিনহাটা-১ ব্লকে সাতটি, সিতাই ব্লকে চারটি ও দিনহাটা পুরসভা এলাকায় চারটি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। ওই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারগুলিতে সব মিলিয়ে ২০০০’র বেশি পরিযায়ী শ্রমিককে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দিনহাটা মহকুমার সিতাই, চৌধুরীরহাট, সাহেবগঞ্জ, নাজিরহাট, আবুতারা, নয়ারহাট, সুকারুরকুঠি, ভেটাগুড়ি, গোসানিমারি সহ তিন ব্লকের কয়েক হাজার শ্রমিক কর্মসংস্থানের জন্য রাজস্থান, হরিয়ানা, দিল্লি, মুম্বই, বিহার, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ সহ অন্যান্য রাজ্যে কাজে যান। লকডাউনের জেরে সেখানে তাঁদের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা ধীরে ধীরে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। তাঁদের দিনহাটায় ফেরার পর হোম কোয়ারেন্টাইনের পাশাপাশি সরকারি কোয়ারেন্টাইনে ১৪ দিন রাখা হচ্ছে।